পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়ে জানতে চাইবে ঢাকা
বাংলাদেশ তিস্তার প্রবাহ হ্রাস করার লক্ষ্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিষয়ে ভারতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি বণ্টনের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) পররাষ্ট্র দপ্তরে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন বলেন, ‘আমরা আমাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং জেআরসির (যৌথ নদী কমিশন) সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে একটি পেপার তৈরি করব। (তারপর) আমরা বিষয়টি সম্পর্কে ভারতীয় পক্ষের কাছে জানতে চাইব।’
সেহেলি সাবরিন আরও বলেন, ‘ঢাকা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে এবং বর্তমানে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য পররাষ্ট্র দপ্তর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও জেআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় সেচের উদ্দেশ্যে তিস্তার পানি অপসারণের জন্য দুটি নতুন খাল খননের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর প্রকাশের প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন বক্তব্য এসেছে।
ভারতের টেলিগ্রাফ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তার পানি ব্যবহার করে দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে, যা ভাটির দিকে বাংলাদেশে পানি প্রবাহকে প্রভাবিত করবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পরিকল্পিত তিনটি দার্জিলিং প্রকল্পের মধ্যে দুটিতে সেচের জন্য লভ্য তিস্তার পানির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে ডিসেম্বর-এপ্রিলের শুষ্ক মৌসুমে যখন বাংলাদেশে সেচের পানির চাহিদা বেড়ে যায়।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের অধীনে বেঙ্গল (পশ্চিমবঙ্গ সরকারের) সেচ বিভাগের দুটি খাল খননের পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসার পর ঢাকায় উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে।’
ব্রিফিংয়ে সেহেলি সাবরিন বলেন, ‘নয়াদিল্লির কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পর ঢাকা সমস্যা সমাধানে তার পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে। (তবে) আমরা চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার মাধ্যমে নয়াদিল্লির সঙ্গে উদ্ভূত যেকোনো বিরোধ মীমাংসায় আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
আগামী মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের পানি সম্মেলনেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান সেহেলি সাবরিন। তিনি বলেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ঢাকা দীর্ঘদিন থেকে নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, গত কয়েক বছর ধরে ঢাকা বার বার দিল্লিকে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন বিলম্বিত হওয়ার কারণে উদ্বেগ জানিয়েছে।