পাঁচ ভাইসহ নিহত ৬ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটে পিকআপ ভ্যানচাপায় একই পরিবারের পাঁচ ভাইসহ নিহত ছয়জনের পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কী পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তা নিরূপণ করে ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. জারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরীন ও আইনজীবী শাহীনুজ্জামান।
স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), বিআরটিএ’র ট্রাস্টি বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান সুরেশ চন্দ্র সুশীল। বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে এসে একটি পিকআপভ্যান চাপায় ৯ ভাইবোনের মধ্যে পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
এঘটনায় এনটিভি অনলাইনসহ কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উজ্জল পাল ও জাহিদ হোসেন দোলন এ রিট দায়ের করেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পিকআপ ভ্যানের চাপায় পাঁচ ভাই নিহত হন। এরপর সে মাসেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উজ্জ্বল পাল ও জাহিদ হোসেন দোলন রিটটি করেন।
জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হাসিনাপাড়া এলাকায় সুরেশ চন্দ্র সুশীল মারা যান। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য সুরেশের সাত ছেলে ও দুই মেয়ে আজ ভোরে স্থানীয় একটি মন্দিরে যান। সেখান থেকে ৯ ভাইবোন একসঙ্গে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে পিকআপের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে একসঙ্গে চার ভাই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে আরও এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার ১৫ দিন পর আরেক ভাই রক্তিম শীলও মারা যান।
১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে পিকআপ ভ্যানের চালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় র্যাব।
এ ঘটনায় বিআরটিএ, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং হাইওয়ে পুলিশের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বেপরোয়া গতি ও কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় তদন্ত কমিটি।