পাঁচ সিটি করপোরেশন ভোট : মন্ত্রিপরিষদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে ইসির চিঠি
আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আইনানুগ ও সুষ্ঠু করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক দুটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার তিনিই এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘দুই বিভাগকে দুটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশেষ বিধানের কথা মনে করিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে ইসি। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর বিধান অনুসরণ এবং ইসিকে সহযোগিতা দিতেই এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ইসি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠিতে জানায়, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এসব নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থেকে কারও কারও নির্বাচনে অন্যান্য দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার স্থাপনা/অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
ইসি চিঠিতে জানায়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি-৩ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যেকোন ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত হলে ওই ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত দায়িত্ব পালন বা এরূপ সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে।
ওই বিধিমালার বিধি-৮৯ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর হলে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ দিন সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া বিধি উল্লিখিত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি করা যাবে না। নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে কোনো ব্যক্তি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে নিয়োগের পর নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।
ইসি আরও জানায়, নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে ইসিকে অতীতের ন্যায় সহায়তা দেবেন। নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত যাতে তাদের অন্যত্র বদলি করা বা ছুটি না দেওয়া হয় অথবা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে, এমন কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান, সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো।