পাচার হওয়া ১০ ট্রাক অস্ত্রের হিসাব চান রিজভী
‘বাংলাদেশ থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্র বের হয়ে গেছে’—বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ’র এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব অস্ত্রের হিসাব চেয়েছেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি নাজমুল হাসান কলিম উল্লাহ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র বের হয়ে গেছে।’ এ কথার তাৎপর্য কী? বিএনপি আমলের ১০ ট্রাক অস্ত্রের কথা বলে অনেকেরই ফাঁসি দিয়েছেন, মামলা হয়েছে। কিন্তু, আজ এ দশ ট্রাক অস্ত্রের জন্য মামলা হয় না কেন? আর, এটা যদি অপপ্রচার হয়, তাহলে নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহকে সরকার ধরছে না কেন? এটা একটা ধোঁয়াশা রহস্য। কী করে দশ ট্রাক অস্ত্র বাইরে চলে গেল? এর উত্তর প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে। না হলে বোঝা যাবে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যত মামলা, সব বানোয়াট এবং হয়রানি করার জন্য। বিরোধী দলবিহীন একটি দেশ করার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটাই বাস্তবায়ন করেছেন।”
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএফইউজে ও ডিইউজের যৌথ আয়োজনে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বর্তমান দেশে যে পরিমাণ ভিক্ষুক বেড়েছে, তা আগে কখনও দেখিনি। কোনো সিগন্যালে দাঁড়ালে ভিক্ষুক এসে হা-হুতাশ করে। এ থেকেই বোঝা যায়—দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ’৭০-এর দশকের প্রথমার্ধে যে দুর্ভিক্ষের অবস্থা ছিল, দেশ সে অবস্থার দিকে যাচ্ছে। আমি বিএনপি’র লোক বলে বলছি তা নয়, দেশের অনেক গণ্যমান্য বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন।’
‘বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য অন্ধকার খোঁজে’—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমন মন্তব্যের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অন্ধকার তো খোঁজেন আপনারা। আপনারা অন্ধকারকে পূজা করেন। দিনের আলোর ভোট নিশিরাতে করেছেন। তার পরেও আপনার বলতে একটু দ্বিধা হয় না—অন্ধকার খোঁজে বিএনপি বা বিরোধী দল। জনগণকে ক্ষুধার্ত রেখে আপনার চোখ অন্ধ করে রেখেছেন। আর, গোটা জাতির সঙ্গে তামাশা করছেন। এ তামাশা আর থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘দেশের জনগণ তেল, ডাল, চিনি, লবণ কিনতে পারছে না। আর, আপনারা বলছেন—বেশি দাম দিয়ে কেনা অভ্যাস করতে হবে। জনগণের প্রতি, নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতি সরাসরি ঠাট্টা-মজা করছেন।’
সাবেক এ ছাত্রনেতা বলেন, ‘কিছু ধনী বেড়ে গেলে সে দেশটা সুখী ও স্বচ্ছল দেশে পরিণত হয় না। বরং প্রচণ্ড আর্থিক বৈষম্যতার কারণে সাধারণ মানুষ নিপতিত হয় ভয়ংকর রকমের আর্থিক কষ্টের মধ্যে। আজকেই পড়লাম—সংবাদপত্রে সবচেয়ে মজার ব্যাপার কি জানেন? আল্ট্রা-ওয়েলথ বলে বিশ্বের কয়েকটি দেশ প্রথম দিকে ছিল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন প্রথম দিকে। এদের সবাইকে অতিক্রম করে বাংলাদেশ এখন আল্ট্রা-ওয়েলথ। অর্থাৎ অতিধনীর সংখ্যা বেড়েছে। মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ পদদলিত হচ্ছে। আর্থিকভাবে গোটা জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কিছু লোক আল্ট্রা-ওয়েলথ-এর মানুষ হয়েছেন।’
বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, এম এ আজিজ, কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, দিদারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।