পাবনায় এক রাতে তিনজনের লাশ উদ্ধার
পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানা এলাকায় এক রাতেই তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে কুপিয়ে ও অপরজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ তিনটি ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানাধীন জাতসাখিনী ইউনিয়নের টাংবাড়ি (মধ্যপাড়া) গ্রামের ভ্যানচালক মন্টু সেখ (৫৫), একই ইউনিয়নের নগরবাড়ি রাজনারায়নপুর গ্রামের স্বদেশ চন্দ্র সাহা (৫০)। এছাড়া আত্মহত্যা করা যুবকের নাম রানা আহমেদ (২৫)। তিনি শিমুলিয়া গ্রামের ফজের আলীর ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী জানান, নিহত ভ্যানচালক মন্টু সেখ গতকাল রাতে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হয়। ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাই করতে আসা লোকদের চিনতে পারায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাস্টিয়া গ্রামের ইচেরবিলের পাশে তাঁর লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। আজ শুক্রবার সকালে ভ্যানটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরের ধানক্ষেতের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
অপরদিকে, একই সময় নগরবাড়ি নতুন বাজার এলাকায় দিকে স্বদেশ চন্দ্র সাহার দোকান থেকে সিগারেট কেনাকে কেন্দ্র করে হালিম মোল্লার সঙ্গে বাকবিতণ্ডার হয়। এর এক পর্যায়ে স্বদেশকে কিলঘুষি ও পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে পেটাতে থাকেন হালিম। এ ঘটনার এক পর্যায়ে তিনি মারা যান।
তবে এলাকাবাসী বলছে, স্বদেশ হৃদরোগী ছিলেন। অভিযুক্ত হালিম মোল্লা পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চর বোরামারা গ্রামের কাইম মোল্লার ছেলে।
এদিকে, গতকাল শেষ রাতের দিকে রানা আহমেদ (২৫) নামের এক যুবক গলায় গামছা পেঁচিয়ে গাছের ডালে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যায়, রানা সাত-আট মাস আগে বিয়ে করেছেন। ভোরে তাঁর স্ত্রী তাঁকে বিছানায় না পেয়ে ঘরের বাইরে আসতে চাই দেখেন ঘরের বাইরে থেকে শেকল লাগানো। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখতে পায় গাছের সঙ্গে রানা ঝুলে আছে। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি।
সুজানগর-আমিনপুর সার্কেল অফিসার মো. ফরহাদ হোসেন, আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী, আমিনপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তানভীর আহম্মেদ সবুজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি মো. রওশন আলী তিনটি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভ্যানচালক মন্টু শেখের ছেলে আশরাফুল বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের শনাক্ত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে। দোকানদার স্বদেশের বিষয়ে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। এছাড়া আত্মহত্যা করা রানার লাশও আজ দুপুরে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।