পাবনায় গণপূর্ত ভবনে মহড়া : দুই আ.লীগ নেতার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল
পাবনায় গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র নিয়ে ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতাদের মহড়ার ঘটনায় দুটি শর্টগানের লাইসেন্স বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে লাইসেন্স বাতিলের পর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সম্প্রতি, পাবনা গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের ঘটনা তদন্তে অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার হওয়ায় স্থগিতকৃত পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন রেজা খান মামুন (এম আর খান মামুন) এবং যুবলীগ পাবনার জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ আনোয়ার হোসেন লালুর নামে ইস্যুকৃত শর্টগানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।’
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, পাবনা গণপূর্ত বিভাগে ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রবেশের ঘটনা জানার পরই বিষয়টি তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশ। গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা লিখিত অভিযোগ না করলেও পুলিশ নিজ উদ্যোগে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। ঠিকাদারদের প্রদর্শিত অস্ত্রও জব্দ করা হয়। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে অস্ত্র আইনের শর্তভঙ্গের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। আমরা বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় ওই অস্ত্রগুলোর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করায় জব্দকৃত অস্ত্রগুলি সরকারের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ জুন দুপুরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল গণপূর্ত ভবনে যায়। বাইরে কয়েকজন অপেক্ষায় থাকে। আর নেতারা কয়েকজনকে নিয়ে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমকে খুঁজতে থাকেন। তারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েই উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের কক্ষে যান এবং কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে যান। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন হলে জেলা জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র গুলি জব্দ করে। এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া দুই আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন ও এম আর খান মামুনকে দল থেকে অব্যহতি দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
এদিকে, একই অভিযোগে পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ আনোয়ার হোসেন ওরফে শেখ লালুকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে পাবনা জেলা যুবলীগ।