পাবনায় ‘পুলিশের বন্ধু বঙ্গবন্ধু’ স্থিরচিত্র গ্যালারির উদ্বোধন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক পুলিশ সদস্যের আলতোভাবে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। ঐ পুলিশ সদস্য কিছুটা ইতস্তত আবার কিছুটা আনন্দিত হয়ে হাসিমুখে এগিয়ে যাচ্ছেন। ছবির নিচে লেখা রয়েছে ‘কামালের মা আজ মুরগীর ঝোল রান্না করেছে, আয় একসাথে খাব।’
‘পুলিশের বন্ধু বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সাথে স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কতটা আন্তরিক ও মানবিক ছিলেন, সেটি ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
পাবনা জেলা পুলিশের আয়োজনে শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ‘পুলিশের বন্ধু বঙ্গবন্ধু’ নামে এই স্থিরচিত্রের উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান (অতিরিক্ত ডিআইজি)।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা চন্দন কুমার চক্রবর্তী, পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, পৌর মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রোকনুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. জিন্নাহ আল মামুন, সহকারী পুলিশ সুপার আরজুমান আক্তার, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, পার্থ পবিত্র হাসান ও এস এম আলম প্রমুখ।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোন একদিন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে দায়িত্বে নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্যকে আদর করে হাত ধরে ডেকে নিচ্ছেন খাওয়ার জন্য। পুলিশের সঙ্গে এই মহামানবের যে কতটা আন্তরিক সম্পর্ক ছিল, সেটি আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হলো এই স্থিরচিত্রের মাধ্যমে। পুলিশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বিভিন্ন মুহূর্তের নানা স্থিরচিত্র নিয়ে পাবনা জেলা পুলিশের কার্যালয়ে শৈল্পিক ও নান্দনিক সৌন্দযর্ বর্ধন শোভা পেয়েছে প্রায় ৩৩টি স্থিরচিত্র। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রবেশ মুখের করিডোরের দেওয়াল ও উপরে ওঠার সিঁড়িতে টানানো হয়েছে এ সব ছবি। মূল ছবিতে নিজ বাসভবনের লুঙ্গি পরা বঙ্গবন্ধু আদর করে খাওয়ার জন্য ডেকে নিচ্ছেন তার নিরাপত্তার কাজে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে। নিরঅহংকার সাদা মনের সাহসী এই মহান নেতা কতটা মানবিক ছিলেন, সেটি আমাদের সকলেরই জানা।
পুলিশের সঙ্গে এই মহামানবের ঐতিহাসিক নানা মুহূর্তের বেশ কিছু স্থিরচিত্র আগামী প্রজন্মের পুলিশ সদস্য ও জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আগত সকলেই এক নজরে দেখতে পাবেন।
প্রবেশমুখের মূল দেওয়ালে বঙ্গবন্ধু ও এক পুলিশ সদস্যের সেই সময়ের সংগৃহীত ছবি বড় করে দেখানো হয়েছে। পাশে একই ফ্রেমে আরও ২১টি ছবি রয়েছে। প্রতিটি ছবির নিচে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। দেওয়ালের আরেক প্রান্তের ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে প্রথম পুলিশ সপ্তাহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ তুলে ধরা হয়েছে। এ যেনো সংক্ষিপ্ত বাংলাদেশ ও পুলিশের ইতিহাস সমৃদ্ধ ছোট জাদুঘর। একনজরে ইতিহাসকে জানা ও বাংলাদেশকে ধারণ করার এক দারুণ প্রয়াস।
পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এই স্থিরচিত্রের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে তৎকালীন পুলিশের ত্যাগ ও কৃতিত্বপূর্ণ অর্জন। তা ছাড়া পুলিশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর যে মধুর সম্পর্ক ছিল তাও, ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এ সব চিত্রে।
পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, জাতির পিতার সঙ্গে পুলিশের যে আন্তরিক সম্পর্ক, আমরা ছবির মাধ্যমে সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।