পাবনায় ফাঁকা সিরিঞ্জে টিকা পুশের ঘটনায় তদন্ত কমিটি, দুই স্টাফ নার্স প্রত্যাহার
পাবনায় মেডিকেলের শেষবর্ষের ছাত্রী সাবাহ মারিয়ম অন্তিকাকে করোনার টিকা না দিয়েই ফাঁকা সিরিঞ্জ পুশের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দুইজন স্টাফ নার্সকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. কে এম আবু জাফর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. কে এম আবু জাফর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসানকে। অন্য দুই সদস্য হলেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. জাহিদুর রহমান ও জেলা পাবলিক হেলথ নার্স।’
সহকারী পরিচালক ডা. কে এম আবু জাফর আরও বলেন, ‘গতকাল বুধবার বিকেলে ঘটনাটি জানার পরপরই টিকাকেন্দ্রে নিয়োজিত দুই স্টাফ নার্স মেরিনা গোমেজ ও মিতা খাতুনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘লোক মুখে শুনেছি আমাকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। তবে অফিশিয়ালি এখনও (বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত) কোনো লিখিত নির্দেশনা পাইনি।’
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দায়িত্ব ও কর্তব্যহীন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সবার জন্য প্রাণঘাতী করোনা থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে যে মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, সেটা দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা জরুরি।’
প্রসঙ্গত, ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে গতকাল বুধবার করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে যান ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমবিবিএস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সাবাহ মারিয়ম অন্তিকা। টিকা ছাড়াই ফাঁকা সিরিঞ্জ পুশ করা হয় তাঁকে।
অন্তিকার বাবা অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে সাবা মারিয়ম অন্তিকা গতকাল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে করোনার টিকা নিতে যান। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নার্স তাকে খালি সিরিঞ্জ দিয়ে শরীরে সুচ ফুটান। এতে তার শরীরে রক্ত বের হয়। তার মেয়ে খালি সিরিঞ্জ ঢুকানোর প্রতিবাদ করলে কর্তব্যরত নার্স ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরে তাকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে শহরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের গাফিলতি কোনো মতেই সহ্য করা হবে না। এ বিষয়ে খুব শিগগির দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’