পারিবারিক বিরোধে কুপিয়ে চাচার হাত বিচ্ছিন্ন করল ভাতিজা
পারিবারিক বিরোধের জেরে কুপিয়ে চাচা আব্দুস সালামের হাত বিচ্ছিন্ন এবং চাচাতো বোনসহ তিনজনকে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার টংটংগিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আব্দুস সালামের বড় ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে নয়জনের নামে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় আজ রোববার মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন এমদাদুল হক, উবায়দুল্লাহ, রহিমা খাতুন, মো. সোহেল, মাজত আলী, মো. সবুজ, একরাম হোসেন, আনিস মিয়া ও আব্দুল করিম। ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনের লোকজন পুলিশের কাছে তদবির করছে বলে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান জানান, গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর চাচাতো ভাই এমদাদুল হক (৩৫) তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হন। ঝগড়া দেখে তাঁর বাবা আব্দুস সালাম তা মেটাতে গেলে পূর্ব বিরোধের জেরে এমদাদুল হক দা দিয়ে কুপিয়ে তাঁর বাবা আব্দুস সালামের হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। চিৎকার শুনে তাঁর ভাই তরিকুল ইসলাম ও বোন মাইমুনা বাবাকে উদ্ধার করতে গেলে এমদাদুল হক তাঁর লোকজন নিয়ে তাদেরও কুপিয়ে জখম করেন।
পরে স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় আব্দুস সালাম, তরিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ও মাইমুনাকে উদ্ধার করে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মাইমুনাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাকিদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। গুরুতর আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর আব্দুস সালামের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাঁকে দ্রুত ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলামের শরীরে ১৫০টি ও মিজানুর রহমানের শরীরে ৬০টি সেলাই দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই ঘটনার বিষয়ে জানতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের মিয়াকে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি মামলার কথা স্বীকার করেছেন। মামলাটি সেনসেটিভ বলে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনের লোক, তাই পুলিশ লুকোচুরি খেলছে বলে অভিযোগ ভিকটিম পরিবারের।