পিরোজপুরের কৌড়িখাড়া বিসিক শিল্পনগরীর দৈন্যদশা
ছয় দশক অতিক্রান্ত হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া পায়নি নেসারাবাদের কৌড়িখাড়া বিসিক শিল্পনগরী। এ নগরীতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারখানা থাকলেও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সরু রাস্তা ও সেতুর কারণে মালামাল সরবরাহে পরিবহণ খরচ অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যায়। এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিলে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান সম্ভব।
পিরোজপুরের নেছারাবাদের কৌড়িখাড়ায় ২৪ দশমিক ৭৪ একর ভূমির উপর ১৯৬১ সালে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এ শিল্পনগরী। উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য মোল্লা কয়ার ইন্ডাস্ট্রি নামের একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। বর্তমানে ১৬৯টি প্লটের মধ্যে বরাদ্দ রয়েছে ১৬৬টির। এর মধ্যে ৯১টি চালু থাকলেও বন্ধ রয়েছে ৭৫টি। চালু এসব কারখানায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান রয়েছে প্রায় সাত হাজার শ্রমিকের। অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিক সুবিধা না থাকায় এবং পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততায় ঝুঁকির মুখে রয়েছেন এখানকার শ্রমিক মালিক।
এ শিল্প নগরীটিতে নিরবছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারহ না থাকায় যেমন শ্রমিকদের কম কাজে বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে, তেমনি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পাশের খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পণ্য পরিবহণে ব্যবসায়ীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ নগরীতে যাতায়াতে সরু রাস্তা ও সেতুর কারণে মালামাল সরবরাহে পরিবহণ খরচ অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যায়।
তা ছাড়া একদিকে যেমন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ, তেমনি ফায়ার সার্ভিসের অভাবে ব্যবসায়িক ঝুঁকিতে রয়েছে তারা।
এখানে বেশ কয়েকটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যা ঋণ সুবিধা, প্রশিক্ষণ এবং সরকারি সহায়তা পেলে উৎপাদিত পণ্য যেমন বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব তেমনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থানও সম্ভব বলে জানিয়েছেন শিল্প মালিকরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, অনেক সমস্যারই সমাধান হয়েছে। বাকিগুলোও রয়েছে সমাধানের প্রক্রিয়াধীন।
শিল্প উদ্যোক্তাদের দাবি, যদি শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় এবং রপ্তানিযোগ্য পণ্যে সরকারের সহযোগিতা পাওয়া যায়, তবে এ শিল্প নগরীটি হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা। আর কর্মসংস্থান হতে পারে ২০ হাজার শ্রমিকের।