পি কে হালদারের সব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে. এম. ইমরুল কায়েশের আদালত এই আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এই তথ্য জানান।
রাজধানী ধানমণ্ডির দুটি ফ্ল্যাটসহ পি কে হালদারের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন। শুনানি শেষে স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
গত ২ ডিসেম্বর পি কে হালদারকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দেন একই আদালত।
পি কে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতেই পি কে হালদারের বিদেশ পালান। গত ৮ জানুয়ারি ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ২৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তায় আবেদন করে দুদক। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে করা সব মামলার নথি চায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
বান্ধবীর সম্পদ ক্রোকের আবেদন :
পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালের ফ্ল্যাটসহ দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে। মঙ্গলবার দুদকের উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত আবেদনটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজের কাছে পেশ করা হয়। ধানমণ্ডির ১০/এ সাত মসজিদ রোডে ৩৯ নম্বর বাড়ির ১২/ই ফ্ল্যাটটি এই অবন্তিকার নামে।
ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর রোডের পুরাতন ২১ নম্বর ও নতুন ১৭ নম্বর প্লটে নির্মিত ১৪ তলা বাড়ির সপ্তম তলায় ২ হাজার ৬০৩ বর্গফুটের এ-৭ নম্বর ফ্ল্যাটটিও ক্রোকের আবেদন করা হয়েছে।
জানা গেছে, পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল ধানমণ্ডির ১০/এ সাত মসজিদ রোডে ৩৯ নম্বর বাড়ির ১২/ই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সোমবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক থেকে ডাকা হলে তিনি যথাসময়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হননি। তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন।
এরই মধ্যে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম হাইকোর্টে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পি কে হালদারের ৭০-৮০ জন বান্ধবী আছেন যারা তার অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে নানাভাবে জড়িত।
এরপরই দুদক পি কে হালদারের বান্ধবীর খোঁজে মাঠে নামে। এরই মধ্যে একাধিক বান্ধবীর খোঁজ মিলেছে। অন্যদের খোঁজা হচ্ছে।
দুদক জানায়, ২৭১ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দেড় হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি মামলা করেন। এই মামলাটি তদন্ত করছেন উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপরও তিনি দুদকের চোখে ধুলো দিয়ে বিদেশে পালিয়েছেন।