পুলিশি হামলার প্রতিবাদে প্রগতিশীল জোটের মিছিলে পুলিশের বাধা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং গ্রেপ্তার হওয়া আট নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান তাঁরা।
বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর বিক্ষোভ মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে সচিবালয়ের কাছে পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীরা এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভ ও ঘেরাও ঠেকাতে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ সময় নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি এবং কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলেরও দাবি জানান তাঁরা। পুলিশের বাধা পেলে সেখানেই সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা লেখক মুশতাকের মৃত্যুর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছি। মিথ্যা মামলায় আমাদের অনেককে আটক করা হয়েছে।’
রাশেদ শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘যারা দেশের বাক্স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যারা এ সরকারের বিরোধিতা করবে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এভাবে আওয়ামী সরকার সারা দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করছে। আমাদের এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।’
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাষ্ট্রে বাস করছি, যে রাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধা দেওয়া হয়। আমরা এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এই সরকার ছাত্রসমাজকে ভয় পায়। আমরা এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি যে, প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করব।’
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বাংলাদেশে দুঃশাসন চলছে। এর শিকার লেখক মুশতাক আহমেদ। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছে। আর শ্রমিক নেতা রুহুল আমিন কারাগারে। আজকের পর আমরা আর কোনো বিক্ষোভ করব না। এরপর আমরা তালা ভেঙে ছাত্রনেতাদের নিয়ে আসব। ডিজিটাল আইন বাতিল করার জন্য আমরা নিজেদের জীবন দিয়ে দেব। তবুও আমরা এই আইন বাংলাদেশে চলতে দেব না।’
গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, ‘এই আইনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ লাগবে। আর সে প্রতিরোধকে গণঅভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে যেতে হবে। এই আইন বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির বলেন, ‘কারাগারে লেখা থাকে, রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ। লেখক মুশতাককে কী আলোর পথ দেখালেন জানি না। নিরবতা গেঁড়ে বসেছে। আমরা যদি নিরবতা না ভাঙতে পারি, তাহলে এ শাসন আরও দীর্ঘায়িত হবে। আমাদের এ নিরবতা ভাঙতে হবে। এটি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নয়, এটি লুটপাটের সুবর্ণজয়ন্তী।’
সরকারের উদ্দেশে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী সভাপতি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা চাই না। আপনারা আমাদের কোনো নিরাপত্তা দেননি।’
পুলিশি বাধার প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পরবর্তী কর্মসূচি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা।