ঢাকার পূর্বাচলে রাজউক কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জন্য বরাদ্দ করা ৫২ একর জমি থেকে ১০ একর জমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা প্রেরণের সুপারিশ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর এমন সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ঢাকার পূর্বাচলে রাজউক কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ করা ৫২ একর জমি থেকে ১০ একর জমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা প্রেরণের সুপারিশ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির এমন সুপারিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে হতবাক করেছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি অবিশ্বাস্য যে, একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক ভূমিকা পালন করে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে বিগত ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে, সেই প্রতিষ্ঠানের জমি কমিয়ে দেয়ার সুপারিশ শুভ-লক্ষণ হতে পারে না। এ ধরনের সুপারিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও দেশে শিক্ষা-গবেষণায় নতুন জ্ঞান সৃজনের ক্ষেত্রকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্নে বর্তমান ক্যাম্পাসে প্রায় ৬০০ একর জমি ছিল। কালক্রমে তা সংকুচিত হয়ে বর্তমানে ২৫০ একরে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষকে সামনে রেখে যখন যুগের চাহিদা অনুযায়ী জ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গবেষণা ও উদ্ভাবন উপযোগী পূর্বাচলে একটি ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই প্রস্তাব অনভিপ্রেত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই তৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০১৮ সালের ২১ জুন রাজউকের মাধ্যমে বাস্তবতার আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, গবেষেণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঢাকার পূর্বাচলে ৫২ একর জমি বরাদ্দ দেয় এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জমিটির ব্যবহার সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রেরণ করে; যা বর্তমানে বিবেচনাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাথমিক বরাদ্দকৃত জমি থেকে একটি অংশ বিচ্ছিন্ন করে অন্য প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির বিরোধী বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে।