পেছনের শক্তি সরকার টিকিয়ে রাখতে পারে না : গয়েশ্বর
জনগণ যখন কোনো ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতনের জন্য রাস্তায় নামে তখন কোনো শক্তিতেই তারা টিকে থাকতে পারে না এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় । তিনি বলেন, ‘পিছনে তাদের (সরকারের) শক্তি যতই থাকুক কিন্তু সেই শক্তি তাদের টিকিয়ে রাখতে পারে না।’
আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবি রিজভী ও ঢাকা জেলার বিএনপির সভাপতি খন্দকার আব্বাসসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা জেলা বিএনপি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে অর্থনীতি দুর্নীতির কাছে হারিয়ে গিয়েছে। রাজকোষ খালি, বেতন দেওয়ার টাকাও থাকবে না। এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পকেটমারা ছাড়া রাজস্ব কর্মকর্তাদের আর কোনো কাজ নেই। এ পর্যন্ত ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্প তাদের কাজ স্থগিত রেখেছে, অর্থ যোগান দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু যে টাকাগুলো খরচ হয়েছে সে টাকাগুলো আসবে কোথা থেকে?’
গয়েশ্বর বলেন, ‘অর্থনীতির যে অবস্থা এতে করে শেখ হাসিনার যদি ন্যূনতম মস্তিষ্ক ঠিক থাকতো তাহলে তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছেড়ে দিতেন। কারণ এই অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় তার পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন। এরপরে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে তাদের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে। এই যে টাকাগুলো চলে গেল এই টাকা উদ্ধার করা, যারা টাকাগুলো লুট করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ। এই অবস্থার মধ্যে আজকে দেশটা অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, ‘অনেকেই গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দদের মুক্তি দাবি করছেন। আমি বলবো তাদের মুক্তির দাবি নয়, তাদেরকে মুক্ত করবো। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো, এছাড়া কারাগারে যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ আছেন তাদেরকেও মুক্ত করবো। নাম না জানা, অজানা, অসংখ্য নেতৃবৃন্দ আটক রয়েছেন তাদেরকেও মুক্ত করব।’
আদালতের আচরণ আর গরীবের আচরণের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই দাবি করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘কারণ সরকার সকল আদালতকে আয়ত্ত করেছে, এমন ভাবে আয়ত্ত করা হয়েছে অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয় আদালত সেটাই করে। আদালত তার নিজস্ব বিচার, বিবেক, বুদ্ধি এবং আইনকে অনুসরণ করতে ভয় পায়। যারা ভয় পায় তাদের কাছে বিচার দিয়ে লাভ নেই, কারণ সঠিক বিচার করার ন্যূনতম ক্ষমতা তাদের নেই।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আজকে অন্যায়ভাবে বন্দি আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অসংখ্য মামলায় আজকে বিচার পাচ্ছেন না। অবিচারের মধ্য দিয়ে তারা নির্যাতিত হচ্ছেন। এই সরকার একটি লুটেরা সরকার, ফ্যাসিবাদী সরকার, জনগণের পকেটমার সরকার। অর্থাৎ জনগণের পকেট যদি না মারতো তাহলে ১০ লক্ষ কোটি টাকা কি করে পাচার হলো ? কি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে যায়? কিভাবে শেয়ার বাজারের টাকা উধাও হয়ে যায়? কি করে লাগামহীনভাবে দুর্নীতি হয়?’
মানববন্ধনে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা বেনজীর আহমেদ টিটু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।