প্রতিপক্ষের হামলায় হাত ভেঙে এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত রিতুর
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় হাত ভেঙে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ১১ জুলাই দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাররাম রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহিমপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাররাম রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহিমপুর গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাক (৪০) সপরিবারে গাজীপুরের কোনাবড়ী এলাকায় বসবার করেন। ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগে ঈদ করতে সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন তিনি। গত ১১ জুলাই সোমবার দুপুরে একই এলাকায় নানার বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফিরছিল তার মেয়ে এবার আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী রাদিয়া আক্তার রিতু (১৫)। এ সময় বাড়ির অদূরে পূর্ব শত্রুতার জেরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে তার ডান হাতের কবজি ভেঙে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। হামলায় একই এলাকার মো. রফিকুল ইসলাম (৩২), কাফি আলম (৪৫), আলম মিয়া (৪৭), আব্দুল কাদেরসহ (৩২) আরও কয়েকজন আহত হন। পরে তাদের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় গত ১৩ জুলাই রিতুর বাবা মো. আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। আসামিরা হলেন দক্ষিণ রহিমপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের তিন ছেলে গোলাপ জামান (৪৫), উকিল মিয়া (৩২), রউফ মিয়া (৩০), মৃত আবুলের ছেলে আরিফ দেওয়ান (২৭), আবু তাহেরের ছেলে মো. জিয়া (৩৮), হাবিবুল্লাহর দুই ছেলে হেলাল (৪০) ও আক্রাম হোসেন (৩০), কাতু বেপারীর ছেলে জাহের আলী (৪৫), দিলশাদের ছেলে খোরশেদ (৩৫) ও ইছহাক আলীর ছেলে জুবায়ের (২০)।
রিতুর বাবা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার চাচা শরীফ আকন্দ পাররাম রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান জে কে সেলিম। শরীফ আকন্দ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় শত্রুতার জেরে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসীরা আমার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে রিতুর ওপর হামলা করে তার হাত ভেঙে দিয়েছে। এখন আমার মেয়ে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারছে না। সে এবার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না, তাও অনিশ্চিত। আমি এই হামলার জন্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, রাদিয়া আক্তার রিতু গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার আমবাগ ইউনিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। সে আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার্থী।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত কবীর জানান, ওই ঘটনায় উভয় পক্ষই মামলা করেছে। মামলার পর বিজ্ঞ আদালত থেকে তারা জামিন নিয়েছে। তবে মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।