প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর ও সিল জাল করে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ১
প্রধানমন্ত্রী ও এনএসআই-এর মহাপরিচালকের (ডিজি) স্বাক্ষর ও সিল জাল করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অনানুষ্ঠানিক পত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়ে প্রতারণার দায়ে অসীম হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও নওগাঁ গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের যৌথভাবে অভিযান জেলার মান্দা উপজেলার পাঁজরভাঙা বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত অসীম হোসেনকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, সম্প্রতি এক অভিযোগ সূত্রে এনএসআই জানতে পারে, অসীম হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও এনএসআইয়ের ডিজির স্বাক্ষর জাল করে বিজিবি, কোস্টগার্ডের প্রধান দপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে অনুসন্ধান করে এনএসআইয়ের একটি বিশেষ দল। তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ মেলায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নওগাঁর মান্দা উপজেলার কশব ইউনিয়নের পাঁজরভাঙা বাজারে এনএসআই ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল অভিযান চালিয়ে অসীম কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেট ও একটি হার্ডডিস্কসহ নানা সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালকের স্বাক্ষর জাল করা ডিও লেটার জব্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফির অভিযোগও উঠেছে। উদ্ধার হওয়া ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে এসবের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘ অভিযুক্ত অসীম সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির স্বাক্ষর ও সিল জাল করে তাঁদের নামে ডিও লেটার পাঠিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে মানুষকে চাকরি দেওয়া, চাকরিজীবীদের বদলি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন সুপারিশ বাণিজ্য করতেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ডিও লেটার এনে দেওয়ার নাম করে সুবিধা পাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম এ মামুন খান চিশতী, নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সায়ীদ, ডিএসবির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সুরাইয়া হোসেন প্রমুখ।
এ বিষয়ে নওগাঁ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম শামসুদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক অসীম হোসেন দোষ স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নওগাঁর মান্দা থানায় পেনাল কোড ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।