প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের ঝাড়ু মিছিল
কুষ্টিয়ার বারখাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনসার আলীর দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল করেছেন অভিভাবকরা। আজ বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে প্রথমে মানববন্ধন ও পরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা। অবিলম্বে ওই প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা।
মানববন্ধন চলাকালে বিশেষ প্রহরায় প্রধান শিক্ষককে উদ্ধারের চেষ্টা করে পুলিশ। উদ্ধারকালে ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা ওই প্রধান শিক্ষকের ওপর ঝাড়ু নিয়ে হামলা করেন। এ সময় তাঁরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে স্লোগান দেন। পরে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল বের করেন তাঁরা।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক আনসার আলী শিক্ষাদস্যু, অর্থলোভী।
খন্দকার মাজহারুল আলম নামে এক অভিভাবক বলেন, সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটি গঠন প্রধান শিক্ষক আনসার আলীকে এলাকায় জোকারে পরিণত করছে। কারণ হচ্ছে এখানে দুটি প্যানেল ছিল। অভিভাবক থেকে পাঁচজন ও অন্য প্যানেল থেকে পাঁচজন মনোনয়ন জমা দিয়েছিল। নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রধান শিক্ষক আনসার আলী নিজে কাগজপত্র শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা দিবেন বলে উনি পালান। পরে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, ‘হেড স্যার তো আমাকে সহযোগিতা করেননি।’
খন্দকার মাজহারুল আলম আরও বলেন, আমরা ইউএনওর কাছে গিয়েছিলাম তখন তিনিও হেড স্যারকে কল দিয়েছিলেন। কিন্তু তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। আমরা ডিসি মহোদয়কে জানিয়েছি, শিক্ষাবোর্ডে জানিয়েছি। শিক্ষাবোর্ড থেকে বলা হয়েছে, একজন পরিদর্শক যাবেন, এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবেন। প্রধান শিক্ষক এমপি মহোদয়, চেয়ারম্যান মহোদয়ের নাম করে এমন একজনকে রাতের আঁধারে লুকিয়ে কাগজ জমা দিয়ে আসছেন, গিয়ে বলছেন যে এখানে নির্বাচন হয়েছে, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এখানে কাগজ জমা দেওয়া হচ্ছে। এমন একজনকে নাম দিয়ে পাঠিয়েছেন যিনি জীবনে স্কুলে যাননি। এটা আমাদের কাছে খুব অবাক লেগেছে। আমরা চাই প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতিগুলোর তদন্ত হোক।
বিক্ষুব্ধ অভিভাবক আজিজুর রহমান কাবুল জানান, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে কোচিং বাণিজ্য করছেন প্রধান শিক্ষক আনসার আলী। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক অর্থ আদায় করেন।
আজিজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক আনসার আলী স্কুলের জমির লিজের টাকা স্কুলফান্ডে জমা দেন না। তাঁর হিসাবও তুলে ধরেন না। এ ছাড়া স্কুলকে মাদকের আখড়া বানানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আজিজুর রহমান জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে উপলক্ষে তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান শিক্ষক। নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের কাছে মনোনয়ন ফরমও বিক্রি করেছেন। এখন নির্বাচন না দিয়ে পছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করার পাঁয়তারা করছেন তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আনসার আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’