‘প্রযুক্তি দিয়ে ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধ করতে হবে’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তি বিষয়ক অপরাধ প্রযুক্তি ছাড়া মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তি ব্যবহারকারী, নিয়ন্ত্রক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের সচেতন হতে হবে।
মোস্তাফা জব্বার আজ বুধবার ঢাকায় পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ‘দ্য স্টেট অব ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস কনসিউমার প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণাপত্রের ফলাফল বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা ত্রুটিমুক্ত রাখতে সিম নিবন্ধন, কেওয়াইসি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ত্রুটিমুক্ত এবং গ্রাহকদের ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারের ন্যূনতম দক্ষতা থাকলে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ বিদ্যমান বিভিন্ন ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব।
অনুষ্ঠানে পিআরআই’র নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আহসান মনসুর, আমাজন-এর বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা বিষয়ক কান্ট্রি ডিরেক্টর ওলফগ্যাং হেইনজি, বিকাশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, ই-ক্যাব-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন শিপন এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্যোক্তা সোনিয়া বশির কবির প্রমুখ বক্তৃতা দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই’র গবেষক ড. আশিকুর রহমান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বাংলাদেশের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়ার সার্ভিসের প্রসারকে একটি বিস্ময়কর অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘সমাজের যে সাধারণ মানুষের কাছে, বিশেষ করে যে সব প্রান্তিক কৃষক, জেলে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংক পৌঁছাতে পারেনি, তাদের মধ্যে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা পৌঁছে গেছে।
মন্ত্রী ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস কনজ্যুমার প্রটেকশন বিষয়ক গবেষণা ফলাফলকে অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এ গবেষণা প্রচলিত ব্যবস্থায় বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সমাধানে নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ অবদান রাখবে।’ এজন্য তিনি গবেষণা প্রকাশের জন্য পিআরআইকে ধন্যবাদ জানান।
মন্ত্রী মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের প্রসারে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস পৃথিবীর কাছে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
মোস্তাফা জব্বার ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বিশ্বে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে’ উল্লেখ করে বলেন, ‘পৃথিবী ডিজিটাল হচ্ছে। এটি থামানোর উপায় নেই। চাই বা না চাই, ডিজিটাল হতেই হবে।’ গত ১৩ বছরে ডিজিটাইজেশনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনকে ‘অভাবনীয়’ উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পাশাপাশি ডিজিটাল কমার্সের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করাটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। এমন এক সময় আসবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বলতেই ডিজিটাল বাণিজ্যকেই বোঝাবে।’
মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনকে নিরাপদ রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ছাড়া বক্তারা ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের বিষয়ে গবেষণাপত্র খুবই সময়োপযোগী উল্লেখ করেন এবং এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানে রেগুলেটর মোবাইল ফোন অপারেটর এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।