প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশার বন্দি দশায় ঝুঁকিতে এরিক এরশাদ : ট্রাস্টি বোর্ড
রাজধানীর গুলশানের প্রেসিডেন্ট পার্কে অনুপ্রবেশকারী বিদিশা সিদ্দিকের হাতে বন্দি দশায় জীবনের ঝুঁকিতে আছেন এরশাদ-পুত্র শাহতা জারাব এরশাদ এরিক, এমনটি অভিযোগ করেছে এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ড। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশার হাত থেকে এরিককে উদ্ধারে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাস্টি বোর্ড এ অভিযোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই এরিক ও তার ড্রাইভার মহিদুল এবং কাজী মামুনের সাথে কথোপকথনের দুইটি অডিও রেকর্ড শোনানো হয়। অডিও রেকর্ডে বিদিশা সিদ্দিকের বলয় থেকে নিজেকে মুক্ত করার আকুতি জানিয়ে এরিক বলেন, ‘আমাকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।’ বিদিশার কাছ থেকে মুক্ত না করলে অডিওতে আত্মহত্যার হুমকি দেন এরিক এরশাদ।
এ সময় বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমানে এরিক এরশাদ ট্রাস্টের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। তার খোঁজখরবও নিতে পারছি না আমরা। তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি আমাদের প্রেসিডেন্ট পার্কেও প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এরশাদের রেখে যাওয়া একটি টাকাও উত্তোলন করা হয়নি। এরিকের ভরণপোষণের জন্য শুধুমাত্র একটি ব্যাংক থেকে কিছু লভ্যাংশ উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা ব্যাংকে চিঠি দিয়ে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ চেক বই প্রেসিডেন্ট পার্কে রয়েছে। সুবিধাভোগের সই ছাড়া টাকা তোলা যায় না। এছাড়া ট্রাস্টের টাকা নিরাপদ রাখতেই আমরা চিঠি দিয়েছি। ট্রাস্টভুক্ত স্থাবর- অস্থাবর সম্পদ রক্ষিত আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাজী মামুন বলেন, ‘ট্রাস্টের রুল অনুসারে বিদিশা প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন না। অথচ উনি গায়ের জোরে অক্টোবরে ট্রাস্টি বোর্ডে আরো কিছু সদস্য নিয়োগ করেছে। উনি কাউকে এককভাবে নিয়োগ দিতে পারে না। এসবের পেছনে প্রেসিডেন্ট পার্কে অনুপ্রবেশকারী বিদিশা সিদ্দিক ও তার আর্শিবাদপুষ্ট লোকজনের কী হীন উদ্দেশ্য রয়েছে, তা তদন্তের আহ্বান করছি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এরিক নিজেই তার মায়ের কাছে নিরাপদ মনে করছে না। এরিক জীবন ঝুঁকিতে আছে। আমরা চাই, এরিকের মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ট্রাস্টের সকল সদস্যদের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা করা নিশ্চিত করতে হবে।’
কাজী মামুন বলেন, ‘এরিকের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজ হাতে গড়ে তোলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। এরিকের মাসিক খরচ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সরবরাহ করে আসছে ট্রাস্ট।’ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ট্রাস্টের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক গেল ২৭ অক্টোবর এরিককে ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্য বিদেশ ভ্রমণে নেয়া হয়। সফরের দিন এরিককে দিয়ে অনৈতিকভাবে ট্রাস্টের নতুন চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। আমিসহ অন্য সদস্যদের অব্যাহতি দেয়ার ঘোষণা দেয় বিদিশা গংরা। এরপর থেকেই প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই ট্রাস্টের পক্ষে এরিকের জন্য মাসিক খরচ সরবরাহ ব্যাহত হতে থাকে। এ অবস্থায় এরিকের ভরণপোষণে অচলাবস্থা দেখা দেয়। তার নিরাপত্তায়ও দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এরশাদের চাচাতো ভাই শামসুজ্জামান মুকুল, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও অ্যাডভোকেট কাজী রুবায়েত।