ফরিদপুরে কোরবানির আকর্ষণ বস, বিপাকে খামারিরা
ফরিদপুর জেলার এবাবের কোরবানির সবচেয়ে বড় গরু প্রস্তুত করেছেন খামারি তৈয়বুল নামের যুবক। জেলা সদরের ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের ফতেপুর এলাকায় একটি খামারে গরুটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এক হাজার ২০০ কেজি ওজনের এ গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘বস’।
এই গরুটি ছাড়াও তাঁর খামারে রয়েছে আরও ১৩টি গরু। প্রতিটি গরুই এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রি করার কথা। কোরবানি উপলক্ষে এমন অগণিত খামারিরা তাদের খামারগুলোতে প্রস্তুত করেছে গরু।
কদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। এরই মধ্যে দেশব্যাপী ভয়াবহ রূপে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। ফরিদপুরেও করোনার অবস্থা ভয়াবহ। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার আক্রান্ত ও মৃত্যু। করোনার এমন সময়ে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুরের গরু খামারিরা।
গরু খামারিদের সঙ্গে কথা বলে যানা গেছে, কোথায়- কিভাবে গরু বিক্রি করবেন এখনও নির্ধারণ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। এদিকে, প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে অনলাইনে গরু বেচাকেনার কথা বলা হলেও তা খামারিরা বুঝে উঠতে পারছেন না। খামারিরা তাদের গরুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর জেলায় দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালনপালন করেছেন। এ কারণে খরচ অনেক বেশি হয়েছে তাঁদের। যদি কোনো কারণে এসব গরু বিক্রি না হয় তবে বিপাকে পড়বেন খামারিরা।
খামারি তৈয়বুল জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক যত্নে খামারে ১৪টি গরু বড় করেছেন। এর মধ্যে শখ করে একটি গুরুর নাম রেখেছেন বস। এসব গরু এবার কোরবানির ঈদে বিক্রি করার কথা।
তৈয়বুল বলেন, ‘কোরবানির ঈদ সামনে, আমাদের গরুগুলো কিভাবে বিক্রি হবে সেই দুশ্চিন্তার দিন কাটছে। তাই সরকারের কাছে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
মিলন নামের আরেক খামারি বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। সামনে যে ভালো দিন আসবে সেটা আর মনে হচ্ছে না। অনলাইনে গরু বিক্রির পদ্ধতি আমরা বুঝি না। সরকারের উচিত আমাদের কথা বিবেচনা করে কিছু একটা করা। না হলে পথে বসতে হবে।’
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে প্রায় সাত হাজার গবাদিপশুর খামারি রয়েছেন। এসব খামারে মোট গবাদিপশু আছে ৪৮ হাজার ৪৬৯টি। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৪৪৯টি গরু ও ১৬ হাজার ২০টি ছাগল, ভেড়া ও মহিষ রয়েছে।
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে খামারিরা অনলাইনে গরু বিক্রি করতে পারে। বিকল্প হিসেবে নয়টি উপজেলায় অনলাইনের মাধ্যমে পশুরহাট খুলেছি। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি গরু বিক্রির অ্যাপস ওপেন করা হয়েছে। যেখানে বিক্রেতা ঘরে বসে পশু বিক্রি করতে পারে এবং ক্রেতারা কিনতে পারবে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘আমরা অনলাইনের মাধ্যমে গরুর হাট খুলেছি। যারা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে তাঁরা এখানে গরু বিক্রি করতে পারবেন। আর ক্রেতারাও ছবি দেখে কিনতে পারবেন। এছাড়া চর এলাকার উন্মক্ত স্থানে হাট বসানোর কথা ভাবছি। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু কেনাবেচা করা যাবে।’