ফরিদপুরে শোক দিবসের কয়েকটি তোরণের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা
ফরিদপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত তোরণে দুর্বৃত্তরা হানা দিয়েছে। রাতের আঁধারে বেশ কয়েকটি তোরণ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার গভীর রাতের যেকোনো সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা শহরের বিভিন্ন স্থানে বসানো জাতীয় শোক দিবসের তিন-চারটা তোরণের ক্ষতি করে। তবে ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনও শনাক্ত করা যায়নি অপরাধীদের।
এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে থানায় অভিযোগ দিলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের জনতা ব্যাংকের মোড় মুজিব সড়কে শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নির্মাণ করা তোরণ নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ ব্যানার কেটে ফেলেছে। তোরণের নানা অংশ ক্ষতি করেছে। শহরের আলীপুর প্রয়াত হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে নির্মাণকৃত তোরণের এক অংশের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
এ ছাড়া ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান কর্তৃক নির্মিত একটি তোরণ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ টি এম জামিল তুহিন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এখনো এসব জঘন্য মানসিকতার ব্যক্তিরা কীভাবে এমন নোংরা কাজ করে শহরে ঘুরে বেড়ায়, অবাক লাগে। আমরা এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান বলেন, ‘ফরিদপুরের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা কখনো ঘটেনি। এমন জঘন্য কাজ যারাই করুক, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই তোরণের ক্ষতি যারা করেছে তারা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে। তবে তাদের আমি ভয় পাই না। আমার স্বামী ও তার পরিবার ফরিদপুরের মানুষের জন্য মুজিব আদর্শে কাজ করে গেছে। আমি ও আমার সন্তান আমৃত্যু কাজ করে যাব।’
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা বিপুল ঘোষ বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামের ১৫ আগস্টের শোক জানিয়ে যে গেট নির্মাণ করা হয়েছে সেখান থেকে যারা এই গেটের কালো কাপড়-ব্যানার ছিঁড়ে নিয়ে গেছে; তারা আওয়ামী লীগের ঘৃণিত লোক। যারা এই ধরনের কাজ করেছে, তারা জাতির শত্রু। প্রশাসনকে অতি দ্রুত এসব অপরাধীকে চিহ্নিত করতে হবে এবং আইনের আওতায় তাদেরও আনতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তোরণের ব্যানার যারা ছিঁড়তে পারে তারা আর যাই হোক আওয়ামী লীগের কেউ হতে পারে না। তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া সময়ের দাবি, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের জঘন্য, নোংরা কাজ আর কেউ করার সাহস না পায়। শুধু নিন্দা জানিয়ে মানসিকভাবে শান্তি পাওয়া যাবে না। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন এমন ঘটনা মেনে নেওয়া আমাদের জন্য কষ্টের।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ‘থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এর তদন্তভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাহুলকে দেওয়া হয়েছে। তোরণগুলোর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজগুলো দেখে দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’