ফুটবল ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ডোননদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এই সংঘর্ষের চিত্র ধারণ করতে গেলে উত্তেজিত লোকজন কাউছার হোসেন নামের এক সংবাদকর্মীর ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় তিনি মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনাম ৩০ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে ডোননদী দিগন্ত ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। ডোননদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল রোববার বিকেলে টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে নোয়াগাঁও সমাজ কল্যাণ ক্রীড়া সংঘ ও ডোননদী ক্রীড়া সংঘ অংশগ্রহণ করে।
খেলার একপর্যায়ে রেফারিদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অভিযোগে দুপক্ষের খেলোয়াড়দের মাঝে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ডোননদী দিগন্ত ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ লাঠিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও ক্রীড়া সংঘের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুপক্ষের গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি ধারণ করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন দৈনিক ভোরের কাগজের রামগঞ্জ প্রতিনিধি কাউছারের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে।
নোয়াগাঁও সমাজ কল্যাণ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি ও নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ জানান, খেলায় তাঁদের একটি কর্নার ও বিপক্ষদলের অফসাইড হয়, কিন্তু রেফারি তা দেননি। এ নিয়ে মাঠের বাইরে দর্শকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁদের দলের খেলোয়ারেরা আবেদন করেও ব্যর্থ হন। এর মধ্যেই টুর্নামেন্ট কমিটির লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের খেলোয়ার ও গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। এতে তাঁর এলাকার ১১ জন আহত হন।
তবে এ ঘটনায় টুর্নামেন্ট পরিচালনাকারী ডোননদী দিগন্ত ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোতালেব মাস্টারকে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। তবে সাংবাদিককে মারধর ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।