ফেসবুকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য : রাঙামাটিতে চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা
অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের অভিযোগ এনে সম্প্রতি রাঙামাটির চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন এক নারী।
মামলার বাদী রাঙামাটি জেলা শহরের বাসিন্দা। তার স্বামী একটি ইংরেজি দৈনিকের জেলা প্রতিনিধি।
মামলার চার আসামি হলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি জাহেদা বেগম (৪০), এশিয়ান টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি মো. আলমগীর মানিক (৩৮)। অন্য দুই আসামি মাসুদ পারভেজ নির্জন (২৪) ও শহিদুল ইসলাম হৃদয় (২৫) এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি আলমগীর মানিকের সহযোগী।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘প্রতারণামূলকভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে আমি ও আমার স্বামীর আইডিতে ছদ্মবেশ ধারণ করে আপত্তিকর, মানহানিকর কমেন্ট করে হেয়প্রতিপন্ন ও ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে আসামিরা। পরবর্তী সময়ে আইডি হ্যাক করে আমার ক্ষতির উদ্দেশে আইডি থেকে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে নেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডিতে আমার ছবি প্রকাশ করে আমাকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এর পরও আমাকে এবং আমার স্বামীকে মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলা, আমাকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণের হুমকি দেয় আসামিরা।’
ঘটনা প্রসঙ্গে মামলার বাদী বলেন, ‘রাঙামাটিতে সাইবার ক্রাইম অপরাধীদের উৎপাত বেড়েছে। এই ক্রাইমের সঙ্গে জড়িতরা সংঘবদ্ধভাবে এসব করছে। এরা প্রতিনিয়ত অনেকের সঙ্গেই অপরাধ সংঘটিত করে পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আইনগত ব্যবস্থা নিতেও ভুক্তভোগীরা ভয় পান। আমি, আমার স্বামী ও বাবাকে নিয়ে অনেক জঘন্য অপরাধ করে চলেছে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি। শেষ পর্যন্ত আমাকে ও আমার স্বামীকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ, শ্লীলতাহানির হুমকি দিয়েছে।’
বাদী আরও বলেন, ‘সবকিছু উপেক্ষা করে আমি আদালত এবং থানার দ্বারস্থ হয়ে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি, যেন আমার মতো আর কোনো নিরীহ নারী ও পরিবারকে ভিকটিম হতে না হয়। তাই আমি অনতিবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বাদীর অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। আইসিটি অ্যাক্টের মামলা; তাই তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ও কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তীর মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।