বগুড়ায় দুই শিশু হত্যা : দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন
১৮ বছর আগে বগুড়ার শিবগঞ্জে দুই শিশুকে হত্যার দায়ে দুই আসামিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আসামি পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শফিকুল ইসলাম।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিবগঞ্জের আটমুল মোঘলপাড়া গ্রামের মুসা প্রামাণিকের মেয়ে রহিমা খাতুন (৮) ও ছেলে আবদুর রহিমকে (৬) অপহরণের পরিকল্পনা করে আসামিরা। সে অনুযায়ী, ২০০৪ সালের ২ নভেম্বর দুপুরে মাহফুজুল ওই দুই শিশুকে মাছ দেওয়ার প্রলোভনে আটমুল মাঠের রজনীকুড়ি ডোবায় ডেকে নিয়ে যায়। শিশুরা সেখানে গেলে আসামিরা তাদের অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় শিশুরা চিৎকার দিলে আসামিরা তাদের গলাটিপে হত্যা করে। এরপর মরদেহ একটি ধানক্ষেতে ফেলে দেয়।
শিশু রহিমা ও রহিম বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাদের খোঁজাখুঁজি করে। পরে শিবগঞ্জ থানায় জিডি করা হয়। ঘটনার সাত দিন পর ৯ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে আটমুল মাঠে ধানক্ষেতে দুই ভাইবোনের পঁচন ধরা মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে তাদের বাবা মুসা প্রামাণিক শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন। বিচার শেষে ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামি আবুল কালাম ওরফে বাদশা ও মো. মাহফুজুলকে মৃত্যুদণ্ড এবং আতাউরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
আসামিদের মধ্যে মাহফুজুল হক শিবগঞ্জের আটমুল মোঘলপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে, আকতার হোসেন আতাউর একই গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে ও আবুল কালাম বাদশা একই এলাকার আলতাফ আলী প্রামাণিকের ছেলে। পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় আপিল করেননি। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত জানান, সব আসামি পলাতক। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষে হাইকোর্ট সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন।