বঙ্গবাজারে আগুনের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
ইতিহাসের ভয়াবহতম আগুনে পুড়ে গেছে রাজধানীর বঙ্গবাজার ও এর আশপাশের মার্কেটের কয়েক হাজার দোকান। সেই সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানদারদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। এরপর থেকে ফায়ার সার্ভিসের অর্ধ শতাধিক ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে লেগে যায়। তাদের সঙ্গে রয়েছে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিবিসি, রয়টার্স, এপি, আল জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও সিজিটিএন, ডেকান হেরাল্ড, আল আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমস-সহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা ও সংবাদমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ঢাকার বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক টেলিফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন। পরে অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঢাকার পোশাক কারখানায় টমি হিলফিগার এর মতো পশ্চিমা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জন্য উৎপাদিত কিন্তু রপ্তানি মান পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়া কাপড় এই বঙ্গবাজারে বিক্রি হয়ে থাকে এবং এই কারণে অগ্নিকাণ্ডের শিকার মার্কেটটি সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দুর্বল পর্যবেক্ষণ এবং যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে বাংলাদেশের বহু বাণিজ্যিক স্থানে প্রায়ই আগুন লেগে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের পোশাক শিল্পখাত গত এক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়ন হয়েছে। যদিও বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডসহ অতীতে অনেকবারই বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশের এই শিল্পখাত।
রয়টার্স বলছে, দুর্বল নীতি ও সেগুলোর প্রয়োগ না থাকায় শিল্প সংশ্লিষ্ট নানা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে শত শত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে বিবিসি বাংলার খবরে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে আগুন লাগার পর হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন অভিযোগ করে বিবিসি বাংলাকে বলেন, বঙ্গবাজারের ঠিক বিপরীতে থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরে হামলা চালানো হয়েছে। সদরদপ্তরের গাড়ি ও ভবনে ভাঙচুর করা হয়েছে। আপনাদের পাশে সবার আগে আমরা যাই। তারপর আমাদের ওপর কেন আক্রমণ? কেন আঘাত ফায়ারসার্ভিসের উপরে?’
গত এক বছরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ জন কর্মী নিহত হয়েছে এবং আরও ২৯ জন আহত হয়েছেন।