বন্যার্তদের ত্রাণ দিতে জনগণের সাহায্য নেবে বিএনপি : টুকু
দেশে বন্যার্তদের ত্রাণের অর্থ সংগ্রহে জনগণের কাছ থেকে সাহায্য নেবে বিএনপি। এমনটা জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। আগামী ২৩ জুন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করবে তারা।
আজ মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে টুকু এ কথা জানান। ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর এ সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ২৩ তারিখ থেকে আমরা জনগণের কাছে লিফলেট বিতরণ করবো। লিফলেটে তাদের (জনগণের) কাছে আমরা ভিক্ষা চাইব। জনগণের কাছ থেকে যে যা দেয়- এক টাকা দেন, ৫০ পয়সা দেন- সবার কাছ থেকে আমরা ভিক্ষা চাইব। পরের দিন আমরা যাব, ভিক্ষা চাইব- তারা যা দেবেন এটা আমরা গচ্ছিত করব, গচ্ছিত করে এটা আমরা বন্যার্তদের কাছে পাঠিয়ে দেবো।
তিনি বলেন, এটা করার মূল কারণটা হচ্ছে, আমরা জনগণের দল। ডোনেশনে ১০ জনের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার চাইতে কোটিজনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে করা যাতে জনগণ জানল যে, আমি অংশগ্রহণ করছি। আমরা সেটা বাহক হিসেবে দিয়ে এলাম। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এই কার্যক্রম অনুমোদন দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশ বন্যার্তদের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
বিএনপির ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করার এই কাজটি সুন্দরভাবে আপনাদের করতে হবে। আগে আমরা ছোটবেলায় ঢাকায় তখন ধানমন্ডির মধ্যে ছোট ছোট একতলা-দোতলা বাড়ি ছিল। আমরা বাড়ির গেটের সামনে গিয়ে লালসালু কাপড় নিয়ে দাঁড়াতাম যে, বন্যার্তদের জন্য সাহায্য দেন। বাড়ি থেকে মা-বোনেরা যা দিত ওইগুলো নিয়ে এক জায়গায় জমা করে পরে আমরা নৌকা ভাড়া করে চলে যেতাম বন্যার্তদের কাছে। এতে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ে।
তিনি বলেন, কিছু বড় লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিয়ে এলাম কেউ বুঝলো না কীভাবে কি হয়েছে। আর যখন মানুষের কাছে যাবেন, ঢাকার জনগণের কাছে যাবেন, তারা কিছু না কিছু দেবেন-এর মাধ্যমে আপনারা মানুষকে সম্পৃক্ত করছেন। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে কাফেলা বের হয়ে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে হবে। এটাই গণসংগঠনের কাজ।
টুকু আরও বলেন, বন্যার পর থেকে বিএনপি মাঠ পর্যায়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে আছে, তারা দিনরাত কাজ করছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ হাজার লোককে রান্না করে খাবার খাওয়াচ্ছে। প্রতিদিন নৌকা ভাড়া করে প্রায় ৫শ পানিবন্দি লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এক সিলেটের বন্যা দিয়ে বন্যা শেষ হবে না। আমরা ভাটির দেশের লোক। উজানে আসামে যতই বৃষ্টি হবে ততই বাংলাদেশে প্রত্যেকটা জেলায় পানি আস্তে আস্তে ঢুকতে শুরু করবে। গতকাল যেমন আমার জেলা সিরাজগঞ্জ শহরে পানি ঢুকে গেছে, গাইবান্ধায় পানি ঢুকেছে, বগুড়ার একটা অংশে পানি ঢুকে গেছে, সরিষা বাড়ি দিয়েও পানি ঢুকেছে।
তিনি বলেন, পানি সারা দেশে ঢুকেছে। সেজন্য বলছি, আমাদের এই কাজটা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কাজ। আমরা তিনটা কাজ করবো। আমরা তিনটা পর্যায়ে কাজ করবো। একটা হচ্ছে- মানুষের জীবন বাঁচানো। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে এনে তাদের খাবার সরবরাহ করা। তারপরে যখন বন্যার পানি নেমে যাবে তখন তাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা, বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষজনের রোগ-বালাই হবে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া-ইত্যাদি কাজগুলো করতে হবে। আমরা একটা কম্প্রিহেনসিভ প্রোগ্রাম নিয়েছি।
মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় এই সভায় উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানও বক্তব্য দেন।