বন্যায় দুর্ভোগে মৌলভীবাজারের আড়াই লাখ মানুষ
মৌলভীবাজারে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ ছাড়া মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আজ সোমবার দুপুরের পর থেকে মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় জেলার ৫০টি ইউনিয়নের ৫০০ গ্রামের আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এরই মধ্যে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বন্যাকবলিত এসব এলাকার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে।
হাকালুকি হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদীপুর, মীরশংক, গৌরিশংকর, কালেশারসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, আজ সোমবার সকাল থেকে পানি বাড়ার কারণে তাঁরা অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। পানি ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় সদ্য পাওয়া বোরো ধান, গৃহপালিত গবাদি পশু, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আর বসতবাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। তাই, তারা আত্মীয়-স্বজনের বাসাবাড়ি বা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছুটছে। অনেক স্থানে প্রধান সড়কে গরু-ছাগলসহ গবাদি পশু রেখেছে তারা। এ ছাড়া চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে এসব মানুষেরা।
জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার কারণে এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার ১১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করেছে। এ ছাড়া বন্ধ রয়েছে ৪৫টি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। সবমিলিয়ে ১৬১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যাকবলিত এসব মানুষের জন্য ২১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। শুকনো খাবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বিতরণ করছেন। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে এবং সহযোগিতা দিতে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।