বরগুনায় টিকায় অনীহা, দুই হাজার ডোজ ফেরত
বরগুনায় করোনার টিকা নিতে স্থানীয়দের আগ্রহ কম থাকায় এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার আশঙ্কায় জেলার তিনটি উপজেলা থেকে দুই হাজার ডোজ টিকা ফেরত পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের এক মাস অতিবাহিত হলেও টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৭ মার্চ বরগুনা থেকে দুই হাজার ডোজ টিকা ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, আগামী ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের মতো বরগুনায়ও টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে ২৪ হাজার ডোজ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় সাত হাজার ৩০ ডোজ, আমতলীতে সাত হাজার ২৮০, পাথরঘাটায় চার হাজার ৪১০, বামনায় দুই হাজার ১৪০ ও বেতাগীতে তিন হাজার ১৪০ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুধু তালতলী উপজেলায় হাসপাতালের আন্তবিভাগীয় সেবা বন্ধ থাকায় সেই উপজেলায় কোনো টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনা জেলায় এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ২৩৯ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ১১ হাজার ৩৪ জন ও নারী রয়েছে ছয় হাজার ২০৫ জন।
আমতলী উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা মো. নূরুজ্জামান ফারুক জানান, ‘করোনার টিকা নেওয়ার বিষয়ে আমাদের সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। এখনও করোনা টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই ভয় পাচ্ছে। তাই টিকা নেওয়ার বিষয়ে আরও সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া জরুরি।’
বর্তমানে তালতলী উপজেলার বাসিন্দাদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। যা তালতলী থেকে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে তালতলীর বাসিন্দাদের এত দূরে গিয়ে টিকা দেওয়ায় অনাগ্রহ দেখা দেয়। ওই উপজেলার মোট কতজন বাসিন্দা টিকা নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এমন সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবিউল কবির জোমাদ্দার বলেন,‘তালতলী ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে টিকা দেওয়ার মতো সক্ষমতা না থাকায় স্থানীয় এলাকাবাসীকে আমতলী উপজেলায় গিয়ে টিকে নিতে বলা হয়েছে। কিন্ত এতদূর গিয়ে টিকা নিতে অনেকেরই আগ্রহ নেই।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করা পরও করোনাভাইরাসের টিকা নিতে চাচ্ছে না। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আশঙ্কায় ২০০ ভায়েল অর্থাৎ দুই হাজার মানুষের টিকার ডোজ ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতালে টিকার কোনো সংকট নেই।’
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, ‘আমাদের সেন্ট্রাল দপ্তর থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা টিকা ফেরত পাঠিয়েছি। আমাদের বলা হয়েছে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে টিকা অব্যবহৃত থাকলে সেগুলো ফেরত পাঠানোর জন্য। কেননা দেশের অনেক জায়গা রয়েছে সেখানে এখনও টিকার চাহিদা রয়েছে। তাই সমবণ্টনের জন্যই টিকা ফেরত পাঠিয়েছি। প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য আমাদের যে পরিমাণ টিকার প্রয়োজন তা আমাদের কাছে মজুত রয়েছে।’