বরিশালে জোড়া লাগানো যমজ কন্যাশিশুর জন্ম
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পেটে জোড়া লাগানো যমজ কন্যাশিশুর জন্ম হয়েছে। তবে তাদের হাত, পা মুখ মাথা আলাদা ও স্বাভাবিক রয়েছে। জন্মের পর থেকেই এখন পর্যন্ত নবজাতক দুজন সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা আবু জাফর।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গৌরনদী উপজেলা সদরের মৌয়ূরী ক্লিনিকের চিকিৎসক তানজিদ রহমানের সফল অস্ত্রোপচারে জোড়া লাগানো জমজ শিশু দুটি ভূমিষ্ঠ করেন প্রসূতি হালিমা।
শিশুর বাবা আবু জাফর বলেন, ‘আমার বাড়ি মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের সেলিমপুর গ্রামে। আমার আরও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। সিজারিয়ানের পর আমার স্ত্রী ও সন্তান দুটি সুস্থ আছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তবে গৌরনদীতে জোড়া লাগানো যমজ শিশু দুটির সঠিক চিকিৎসা হবে না বলে তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখানে ৩টা ৪০ মিনিটে নবজাতক ওয়ার্ডে তাদের ভর্তি করিয়েছি।’
দায়িত্বরত চিকিৎসক সৌরভ বলেছেন, ‘ভর্তি হওয়া নবজাতক দুজন এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে। তাদের আলাদা করার অপারেশন বরিশালে হয় না। এজন্য নবজাতকদের ঢাকায় নিতে হবে। আপনারা জানেন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশু দেশে আলাদা করা হয়। এর আগেও দেশে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো মাথা আলাদা করা হয়েছে। আমি আশা করি এই শিশু দুজনকেও আলাদা করা সম্ভব। এজন্য তাদের শিগগিরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। আমরা আজই তাদের ঢাকা নিয়ে যেতে বলেছি। আজ না পারলেও হয়তো আগামীকাল নিয়ে যাবেন।’
ডা. সৌরভ বলেন, ‘শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমি যোগদানের তিন বছরের মধ্যে এমন নবজাতক এই প্রথম ভর্তি হলো।’
নবজাতকদের নানি মৌলি বেগম জানিয়েছেন, দুই মাস আগে স্থানীয় ক্লিনিকে আল্টাসনোগ্রাম করালে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে। কিন্তু তারা যে জোড়া লাগানো তা বলেননি।’ মৌলি বেগম দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন যেন তাঁর নাতনি দুটি সুস্থ থাকে। একইসঙ্গে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে নবজাতকদের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় বলে সরকার ও সবার কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।
নবজাতকদের বাবা আবু জাফর জানান, তিনি পুরান ঢাকায় মুদি দোকান করতেন। কিন্তু করোনার কারণে ক্রেতা কমে যাওয়ায় পাওনা টাকা পরিশোধ করেননি অনেক ক্রেতা। ফলে তাঁর মুদি দোকান বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ঢাকায় ভ্যানগাড়ি চালান।
আবু জাফর বলেন, ‘ভূমিষ্ঠ হওয়ার আমার সন্তান দুটি বাঁচাতে হলে অপারেশন করতে হবে। এই অপারেশন ব্যয়বহুল বলে শুনেছি। আমার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারসহ সামর্থবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি।’