বরিশালে মহাসড়কে দুর্ঘটনা : স্ত্রী-সন্তান বেঁচে নেই, জানেন না গুরুতর আহত ফয়সাল
শ্যালিকার বিয়েতে এসে স্ত্রী এবং দেড় বছরের সন্তানকে হারালেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের জয়রামপট্টি এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন। মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন ফয়সাল নিজেও। তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জে বিআরটিসি বাসের সঙ্গে ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গতকাল বুধবার নিহত হয় ছয় জন। এর মধ্যে আহত হয়েছেন কেবল ফয়সাল হোসেন। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। নিহত ছয় জনের মধ্যে শের-ই-বাংলা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আহত ফয়সালের স্ত্রী সাথী আক্তার এবং তাঁর দেড় বছরের কন্যা ফারহানার।
ফয়সালের বাবা ইকবাল হোসেন পেশায় চা-দোকানি। তিনি বলেন, ‘পেশায় রাজমিস্ত্রী আমার ছেলে ফয়সাল শ্যালিকার বিয়ে উপলক্ষ্যে আজ সকালে বাকেরগঞ্জে যায় আগৈলঝাড়া থেকে। এর আগের দিন ফয়সালের স্ত্রী-সন্তান বাকেরগঞ্জে যায়। দুপুরে আমরা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে আমার নাতনি ও ছেলের বউয়ের লাশ দেখতে পাই। আমার ছেলের অবস্থাও খুব খারাপ। সিটি স্ক্যান করিয়েছি। কী হয়, কিছু বুঝতে পারছি না।
ফয়সাল যদি জানতে পারে তার স্ত্রী ও মেয়ে মারা গেছে, তাহলে ফয়সালও বাঁচবে না।’
সাথী আক্তারের চাচাতো ভাই মো. বায়জিদ বলেন, ‘বাকেরগঞ্জের কলসকাঠি ইউনিয়নের মিনাবাড়িতে সাথীর বাবার বাড়ি। বিয়ের অনুষ্ঠানে তারা এখানে এসেছিল। কোনো কারণে তারা বাকেরগঞ্জ শহরে যাচ্ছিল কলসকাঠি থেকে। আর, সে সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আমার বোন ও ভাগ্নি মারা যায়।’
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রেজাউল করিম সিকদার বলেন, ‘সাথী আক্তারকে হাসপাতালে আনার সঙ্গে সঙ্গেই দুপুর সোয়া ১টার দিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে শিশুটিকে সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হলে বিকেলে তারও মৃত্যু হয়। এখন ফয়সাল নামের একজন চিকিৎসাধীন। তাঁর চিকিৎসা চলছে।’
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘নিহতদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আহতর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে ঘটনা তদন্তে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
বুধবার দুপুরে বাকেরগঞ্জে বিআরটিসি’র বাসচাপায় ইজিবাইকের চালকসহ ছয় যাত্রী নিহত হয়। বাসচালক এবং তাঁর সহকারীকে আটক করা যায়নি।