বশেমুরবিপ্রবি’র ছাত্রী ধর্ষণ : অনুসন্ধানে পুলিশের একাধিক টিম
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন তিন জনকে আটকের পর অন্যদের অনুসন্ধানে রয়েছে গোপালগঞ্জ পুলিশ।
পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম আলাদা আলাদাভাবে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে, এখন পর্যন্ত নতুন করে কেউ আটক হয়নি।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার মহাসড়ক অবরোধস্থলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড.একিউএম মাহবুবের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসবেন বলে জানা গেছে। এ সময় তাঁদের চার দফা দাবির বিষয়েও আলোচনা হবে।
জানা গেছে, গত বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে বশেমুরবিপ্রবির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জ। পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী সদর থানা ঘেরাও করেন। একই সঙ্গে তাঁরা প্রথমে তিন ও পরে সিসিটিভি ফুটেজ প্রদর্শনসহ চার দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দেন। সকাল ৬টা থেকে অবরোধ করে রাখেন ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব ও প্রক্টর রাজিউর রহমান।
পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান। এ সময় তাঁরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের আটকের আশ্বাস দেন। তবে তাঁদের আশ্বাসের পরও চার দফা দাবিতে অবরোধে অনড় থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে হামলার ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পৌনে ৫টার দিকে এক দল উচ্ছৃঙ্খল যুবক সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের সরে যেতে বলেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলে। এক সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন তাঁরা। এলাকাবাসীর বেশ কয়েকজন জানান, হামলাকারীদের মধ্যে অনেকে স্থানীয় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জুয়েল আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া অন্তত আট জন আহতের ঘটনা ঘটে।
পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে ১১ ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
এদিকে, ধর্ষণ ঘটনায় আটক তিন জনের মধ্যে সুইপার কলোনীর অন্তর (২২) ও জীবনকে (২৩) ছেড়ে দিতে সড়ক অবরোধ করে হরিজন সম্প্রদায়। এ সময় তাঁরা সড়কে ময়লা ফেলে বিক্ষোভ করেন। পরে ‘আটকদের মধ্যে কেউ ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত না থাকলে ছেড়ে দেওয়া হবে’ বলে পুলিশ আশ্বাস দিলে অবরোধ থেকে সড়ে দাঁড়ান হরিজনরা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান জানান, ধর্ষকদের আটকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ একাধিক টিম কাজ করছে। খুব দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
অন্যদিকে আজ সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ, ধর্ষণের বিচার চেয়ে চার দফা ও সড়ক অবরোধে হামলার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল এ বিষয়ে আলোচনা করছেন। আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।