বাঁশের কেল্লা পেজ থেকে উসকানি ছড়িয়ে পঞ্চগড়ে হামলা : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের ওপর জঘন্যভাবে হামলা করা হয়েছে। হামলা করার আগে বাঁশের কেল্লা পেজ থেকে কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে ঐক্য পরিষদ, বিএনপির সাবেক এমপি রুমিন ফারহানা ও হারুনুর রশিদের ফেসবুক পেজ থেকে উসকানি ছড়ানো হয়েছে। উসকানি ছড়িয়ে সংগঠিত করে এই হামলা করা হয়েছে।’
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ২-৪ মার্চ আহমদিয়া মুসলিম (কাদিয়ানী) জামাতের বোদা উপজেলার ফুলতলা, শালশিরি, আহমদনগর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর দোকানপাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের আজ রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যারা সারা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, যারা বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, এই হামলা তারা করেছে। সেই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হামলা করা হয়েছে। মানুষকে উসকানি দেওয়া হয়েছে। বাঁশের কেল্লা কারা পরিচালনা করে আপনারা জানেন। একই সাথে এখানকার যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোটরসাইকেলে করে উসকানি ছড়িয়েছে। তেঁতুলিয়ার ছাত্রশিবিরের সভাপতি উসকানি ছড়িয়েছে। এখানে যারা যুক্ত ছিল তাদের বেশিরভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। তারা ব্যবহার করেছে অন্য ব্যানার। কিন্তু এরা মূলত বিএনপি-জামায়াতের কর্মী।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ধাক্কামারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ এবং পৌর যুবলীগের সহসভাপতি শাহীন আলমের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালানো হয়েছে। তারা পুলিশ বক্সে হামলা করেছে। ডিসি অফিসে এসপি অফিসে হামলার চেষ্টা করেছে। থানায় হামলার চেষ্টা করেছে, র্যাবের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। একইভাবে তারা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ করেছিল। একই কায়দায় উসকানি ছড়িয়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের জলসায় হামলা করা হয়েছে। আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বাড়ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়েছে। শহরের দোকানপাটে হামলা চালিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘এসব হামলা ঢাকা ও লন্ডন থেকে মনিটর করা হয়েছে। সারা দেশে গন্ডগোল লাগানোর উদ্দেশ্য ছিল তাদের। পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলছি। যে বা যারাই এটার সাথে যুক্ত থাকুক না কেন, কোন দল বা কোন মত এটা না দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
নারকীয় এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামের নামে এভাবে কারো ওপর হামলা করা কোনভাবেই ইসলাম কোনদিন অনুমোদন করে না। রসুল সাল্লাল্লাহু (সা.) এভাবে মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা কখনো বলেননি। ইসলামের নামে যারা হামলা করেছে তারা আসলে ইসলামের গায়ে কালিমা লেপন করেছে। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে ইসলামকে ব্যবহার করে রসুলের নাম ব্যবহার করে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, মানুষের ওপর হামলা করেছে, সরকারি সম্পত্তিতে প্রশাসনের ওপর হামলা করেছে তারা ইসলামেরও শক্রু। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে বদ্ধপরিকর।’
তথ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম সুজন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট মন্ত্রীর সাথে ছিলেন।
পরে মন্ত্রী পঞ্চগড় শেরেবাংলা পার্কের মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।