বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও বাল্যবিয়ে কমছে : ইউএনএফপিএ
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও বাল্যবিয়ের হার কমছে এবং গর্ভনিরোধক প্রবণতার হার বেড়েছে। গতকাল রোববার (৩০ এপ্রিল) প্রকাশিত সর্বশেষ স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএফপিএ’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন ব্লোখুস ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু ও বাল্যবিয়ের হার কমছে এবং গর্ভনিরোধক প্রচলনের হার বাড়ছে। এই উল্লেখযোগ্য সাফল্য সত্ত্বেও এসডিজি অর্জনে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে।’
বিশ্বের জনসংখ্যা এবং জনসংখ্যার প্রধান উন্নয়ন ও মূল প্রবণতা বিশ্লেষণ করে স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউএনএফপিএ।
সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে ২০২২ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৯ দশমিক ৮ মিলিয়নে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনসংখ্যা ১৭৩ মিলিয়ন, যা ২০২৩ এর জন্য একটি অনুমান ভিত্তিক সংখ্যা। আদমশুমারি অনুসারে বাংলাদেশে পুরুষের (৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশ) তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি (৫০ দশমিক ৪৩ শতাংশ), যা লিঙ্গ লভ্যাংশ অর্জনসহ সমাজ ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। জনসংখ্যায় বয়স কাঠামোতে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী ২৬ শতাংশ, ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ৬৮ শতাংশ এবং ৬৫ বছর বয়সী ৬ শতাংশ; যা একটি ইতিবাচক জনসংখ্যাগত পরিবর্তন দেখায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালে আয়ুষ্কাল পুরুষের জন্য ৭২ এবং নারীদের জন্য ৭৬ বছর (২০২১ সালে পুরুষের জন্য ৭০ দশমিক ৬ এবং নারীদের জন্য ৭৪ দশমিক ১)।
ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, প্রতিবেদনে মাতৃমৃত্যু হার ১২৩ (প্রতি এক লাখ প্রসূতিকালীন মৃত্যুতে) উল্লেখ করা হয়েছে। এটি ইউএনএফপিএ, ডব্লিউএইচও, বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফের একটি নতুন অনুমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
ক্রিস্টিন ব্লোখুস আরও বলেন, ৫১ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায় (১৮ বছর বয়সের আগে ৫০ শতাংশ এবং ১৫ বছরের আগে ২৭ শতাংশ, বিডিএইচএস ২০২২)। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি।
বয়ঃসন্ধিকালে গর্ভধারণের উচ্চহার সম্পর্কে ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি বলেন, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি হাজার মেয়ের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালীন জন্মদানের হার ৭৪, আর প্রতি চারজন বিবাহিত কিশোরীর মধ্যে একজন ইতোমধ্যে সন্তান ধারণ করা শুরু করেছে। গর্ভনিরোধক বিস্তারের হার ৬৪ শতাংশ।
ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, নারীদের সন্তান ধারণ পছন্দের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য রয়েছে—বাংলাদেশের কিছু নারী তাদের নিশ্চয়তা না থাকার কারণে সন্তান নিতে পছন্দ করেন না, অন্যরা আবার কমপক্ষে একটি পুত্রসন্তানের জন্য তাদের পরিবারের আকার বাড়িয়েছেন, যা পরিবারের সুরক্ষায় সহায়তা হিসেবে দেখা হয়।