বান্দরবানে তিন খুনের ঘটনায় মামলা, ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ
চাঞ্চল্যকর তিন খুনের ঘটনায় বান্দরবানের লামায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহত মাজেদা বেগমের মা লালমতি বেগম বাদী হয়ে আজ শনিবার লামা থানায় মামলাটি করেন। মামলা নম্বর : ৮, ধারা- ৩০২/৩৪।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে তিনজনের লাশ শনিবার বিকেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। তবে কুয়েতপ্রবাসী নুর মোহাম্মদ এখনো পর্যন্ত দেশে না আসায় দাফন করা হয়নি লাশ। ফ্রিজিং গাড়িতে লাশগুলো রাখা হয়েছে।
অপরদিকে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার ও শনিবার ছয়জনকে আটক করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটককৃতরা হলেন নিহত মাজেদা বেগমের দেবর মো. শাহ আলম (৪৩) ও মো. আবদুল খালেক (৪০), নিহতের বড় বোন রাহেলা বেগম (৪০), তাঁর স্বামী মো. আবদুর রশিদ (৪৮), হাফেজ সায়েদুর রহমান (১৮) ও স্থানীয় যুবক মো. রবিউল হোসেন (২১)। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক ব্যক্তিদের আজ রাতে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে লামা পৌরসভার চাম্পাতলী গ্রামে কুয়েতপ্রবাসী নুর মোহাম্মদের বসতঘর থেকে তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার জেরিন আখতার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।
কুয়েতপ্রবাসী নুর মোহাম্মদের মেয়ে রাবেয়া ইয়াছমিন বলেন, আমার ছোট মা মাজেদা বেগমকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে, ছোট বোন নুরে জান্নাত রিদাকে গলা টিপে এবং মেজো বোন সুমাইয়া ইয়াছমিন রাফিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের সবার শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।
রাবেয়া ইয়াছমিন আরও জানান, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের জন্য এই খুন হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার আমার মা লামা শাখায় তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেছিলেন। আমার ধারণা, খুনিরা হয়তো পরিচিত হবে। না হলে তারা অনায়াসে কিভাবে ঘরে ঢোকে? জোর করে ঢুকলে ঘরের লোকজন চিৎকার দিলে আশেপাশের মানুষ এগিয়ে আসত। তাছাড়া এমনও হতে পারে, খুনিরা হয়তো আগে থেকে ঘরে ঢুকে ওত পেতে ছিল।
বান্দরবানে র্যাব-১৫-এর কোম্পানি কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নিত্যান্দ দাস বলেন, ‘আমরা যাদের সন্দেহ করেছিলাম, ইতোমধ্যে তাদের ছয়জনকে আটক করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটিত হবে।’
পুলিশের লামা সার্কেলের এএসপি মো. রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘প্রবাসীর ঘরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে মা ও দুই মেয়ের লাশ খাটে ও মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেছি। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছিল বান্দরবান সদর হাসপাতালে। সেখানে ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও লামা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, ঘরের আলমারি, ওয়ারড্রপ খুলে স্বর্ণালংকার লুটপাটের আলামত পাওয়া গেছে। ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা দুই লাখ টাকাও বাসায় পাওয়া যায়নি।