বাবার কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশু নিহতের ঘটনায় আটক ৩
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাবার কোলে থাকা শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাতকে (৪) গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি আজ শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন—বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের এমাম হোসেন ওরফে স্বপন (৩০), লফিতপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন বাবর (২৩) ও একই গ্রামের দাউদ হোসেন রবিন (১৭)।
পুলিশসূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অন্তত ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় শিশুটির বাবা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব হাজিপুর গ্রামের রাশেদ মিয়ার বাড়ির আলম দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাদশার কাছে মাটি বিক্রি করেন। কিন্তু, বাদশা চুক্তির চেয়ে অতিরিক্ত মাটি কেটে নিতে চাইলে গত দুই দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ঝামেলা হয়।
নিহতের মামাতো ভাই ব্যবসায়ী আবদুল্যাহ আল মামুন অভিযোগ করে বলেন, ‘মাটি কাটার বিরোধের জেরে বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে সন্ত্রাসী রিমনের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রহিম, মহিন, সুজনসহ ১০ থেকে ১৫ জন অস্ত্রধারী আমার দোকানে এসে গালিগালাজ করেন। ওই সময় আমার মামা জাহের তাঁর শিশু মেয়ে জান্নাতকে নিয়ে চিপস আর চকলেট কিনে দেওয়ার জন্য দোকানে আসেন। এ সময় রিমন আমার মামাকে দোকানে দেখে মামাকে গালমন্দ করেন।’
মামুন বলেন, ‘গালমন্দের একপর্যায়ে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে অস্ত্রধারীরা গুলি করেন এবং জান্নাতকে ইট দিয়ে আঘাত করেন। এরপর মামা দোকান থেকে বের হয়ে বাড়ির উদ্দেশে বের হলে রিমন ও তাঁর বাহিনীর সদস্যরা পিছন থেকে আবারও জান্নাতকে এবং মামাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে জান্নাত কানে, মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয় এবং মামা চোখে গুলিবিদ্ধ হন।’
পরে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে কুমিল্লায় শিশু তাসপিয়ার মৃত্যু হয়।