বাসের চাপায় দুমড়েমুচড়ে গেল ৪ অটোরিকশা
বরিশালে সাকুরা পরিবহণের একটি বাসের চাপায় চারটি অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে গেছে। এ দুর্ঘটনায় তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। সে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের একটি পরিবহণের চালকের সহকারী বলে জানা গেছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন—অটোরিকশার চালক রতন, শাহরিয়ার ও বেল্লাল। তাঁদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, এ দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ওই বাসের যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাসটির যাত্রী প্রত্যক্ষদর্শী শামিম উল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে বাসটির ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে এক কিশোর বাসটিতে উঠে স্টার্ট দিলে হঠাৎ করে ঝাঁকুনি শুরু হয়। এরপরই বাসটি উল্টাপাল্টাভাবে চলতে থাকে। এতে কয়েকটি যানবাহনে ধাক্কা লাগলে সেগুলো দুমড়েমুচড়ে যায়। এ সময় কয়েকজন আহত হয়। এর মধ্যেই বাইরে থেকে কেউ একজন লাফ দিয়ে বাসে উঠে ব্রেক করলে বাসটি নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমরা যাত্রীরা সবাই দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমরা পরিবার নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যাই।’
নওরীন আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে আমি ঢাকায় যাব। গাড়ি হঠাৎ করে চালু হয়ে গেলে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে। সিট থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল। বাসের চালক থাকতে কেন হেলপার গাড়ি চালাবে? গাড়িটি ভয়ংকরভাবে ঘুরপাক খাচ্ছিল। বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। শ্রমিক ইউনিয়নে কথা বলেছি, তারা গাড়িটি আটকে দিয়েছে।’
বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মুকছেদুল আকন বলেন, ‘রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনায় আমাদের চারটি গাড়ি চাপা দেওয়া হয়েছে। একজন চালককে আহত অবস্থায় পরিবহণের নিচ থেকে বের করা হয়েছে। হয়তো তাঁর পা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা গাড়িটি আটকে দিয়েছি। বাস শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার ব্যাপারে সমর্থন করেছেন।’
সাকুরা পরিবহণের বরিশাল কাউন্টারের ম্যানেজার আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোনো স্টাফ গাড়ি চালাননি। গাড়ির হেলপার বক্সে মালামাল ওঠাচ্ছিলেন এবং চালক সামনে চা পান করছিলেন। এমন সময় বরিশাল এক্সপ্রেস নামের একটি পরিবহণের হেলপার গাড়িতে উঠে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা একটি এসি বাসের ব্যবস্থা করেছি।’
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে এবং সাকুরা পরিবহণের বাসটিকে পুলিশ জব্দ করেছে।’