বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দাবি শেখ পরশের
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, যেভাবে জামায়াত-শিবিরের দলীয় নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন বাতিল করা হয়েছে, সেভাবে বিএনপির নিবন্ধনও বাতিল করে তাদের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।’
আজ শুক্রবার জাতীয় শোক দিবস-২০২২ উপলক্ষে রাজধানীর বাড্ডা হাইস্কুল মাঠে ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ পরশ বলেন, বিভিন্ন দেশে কালজয়ী মহানায়কদের প্রাণ দিতে হয়েছিল। সকল হত্যাকাণ্ডের মধ্যে একাধিক কারণে যেটি সবচেয়ে বর্বরোচিত সেটি হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ড। পরাস্ত পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্রের নৃশংসতার শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার।
শেখ পরশ বলেন, খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করে। যার মধ্যে বিন্দুমাত্র মনুষ্যত্ব আছে, সে কি পারে বেহায়ার মতো এ দিন জন্মদিন করতে? তিনি নাকি দেশনেত্রী! একজন দেশনেত্রী কীভাবে পারে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকে অবজ্ঞা করতে? আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্ন করতে চাই, কারণ আমার বাবা-মাও সেদিন নিহত হয়েছিলেন। আপনি কীভাবে পারেন এই দেশের একটা বিরাট অংশকে অবহেলা ও উপেক্ষা করতে? খালেদা জিয়া দেশনেত্রী তো দূরের কথা, নেত্রী হওয়ারই যোগ্যতা রাখে না।
তিনি বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, খালেদা জিয়ার শাসনামলে এই আগস্ট মাসেই বার বার রক্তের কালিমা লেপা হয়েছে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা বাংলাদেশে বিএনপির মদতে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। বিএনপি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। আকস্মিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নিষ্ক্রিয় ছিল ওই দিন।
‘আমাদের এও মনে আছে, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য আপনারা কোর্টেও বোমা মেরেছিলেন একযোগে। বিচারক সোহেলকে আপনারা হত্যা করেছিলেন। তারপরও আপনারা নিজেদের রাজনৈতিক দল মনে করেন?’
‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এদেশের মানুষের ওপর যেরকম অত্যাচার করেছেন, আওয়ামী লীগের ভোটারদের চিহ্নিত করে ঘরে ঢুকে পাকিস্তানি বাহিনীর কায়দায় হত্যা করেছেন। তাই আমি বলি বিএনপি গণমানুষের রাজনৈতিক দল না। বিএনপি সন্ত্রাসী দল, যারা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা এবং একটা শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য। ঠিক যেভাবে জামাত-শিবিরের দলীয় নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন বাতিল করা হয়েছে, সেভাবে বিএনপির নিবন্ধনও বাতিল করে তাদের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।’
শেখ পরশ বলেন, এই যে কিছু ত্রাণ নিয়ে অসহায় ও দুস্থ ভাই-বোনদের মাঝে এসেছি; এই উপহারগুলো আপনাদের অধিকার। এগুলোকে দান মনে করবেন না। আজ বিশ্বমন্দা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্রের দামের ঊর্ধ্বগতিতে আপনাদের কষ্ট হচ্ছে— সেটা আমরা উপলব্ধি করি। তাই শোকের মাস আগস্টের কর্মসূচি হিসেবে এই আয়োজন করেছি। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রেশন কার্ডের মাধ্যমে ৩০ টাকায় আপনাদের চাল দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিলেন তিনি। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা তুলে দিলেন রাজাকারদের হাতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হাজার হাজার সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে এই খুনি জিয়া। তিনি আরও বলেন— জিয়াউর রহমানের মতো তার সন্তান তারেকও খুনি। তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সরাসরি জড়িত এবং মাস্টারমাইন্ড। অচিরেই পলাতক খুনি তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. এনামুল হক খান, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুল হাই, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-দফতর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক সরিফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারা।