বিএনপির সাড়ে চারশ নেতাকর্মীর আগাম জামিন
দলীয় কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা, হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের অন্তত সাড়ে চারশ নেতাকর্মীর আগাম জামিন হয়েছে।
এসব নেতাকর্মীরা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চাইলে আজ সোমবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন দেন। তাঁরা হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার আসামি।
আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভুঁইয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সভাপতি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফজলুর রহমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মাহবুবুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আমার চেম্বার থেকে ঝিনাইদহ, ফেনী, ঠাকুরগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর ও কুমিল্লা জেলার বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ২১৭ জন নেতাকর্মীর আগাম জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। তাদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে তাদের দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’
এদিকে ফরিদপুরের ৮৫ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৩৫ নেতাকর্মীর আগাম জামিন করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর, পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী থানা বিএনপির ১১৫ নেতাকর্মীর নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ফজলুর রহমান। সব মিলিয়ে নয় জেলার ৪৫২ জন নেতাকর্মীর আগাম জামিনের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাই ভোলা জেলা বিএনপি শহরের মহাজনপট্টিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষকালে গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম হন। আর সংঘর্ষে আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. নূরে আলম গত ৩ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা করেন। এসব মামলার মধ্যে আছে নারায়ণগঞ্জের যুবদল কর্মী শাওন হত্যা মামলা। আছে পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলাও।