বিএনপি অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের অসাম্প্রদায়িক দল : মির্জা আব্বাস
বিএনপি অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি অসাম্প্রদায়িক দল ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত উচ্চ মানসিকতার একজন নেত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাস এ মন্তব্য করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, “আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একদিন রাতে হঠাৎ আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। জানতে চাইলেন, ‘আব্বাস কী করছেন?’ আমি বললাম, ম্যাডাম ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি আমাকে বললেন ‘ঘুমালে তো চলবে না। আপনি কিছু শোনেননি?’ আমি বললাম, না ম্যাডাম। তিনি বললেন, ‘ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙা হচ্ছে। আপনি যান আপনার এলাকার মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’ তিনি তখন খুব সুন্দরভাবে আমাদের দেশের মুসলমানদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন। তাই এটা প্রমাণিত বিএনপি অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি অসাম্প্রদায়িক দল ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত উচ্চ মানসিকতার একজন নেত্রী।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই এই সমস্ত নোংরামি ছাড়েন। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বহু পন্থা অবলম্বন করেছেন। খুন করেছেন, গুম করেছেন। আমাদের যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে জেলখানা ভরে ফেলেছেন। কোর্টে গেলে আমাদের লোক ছাড়া কাউকে দেখা যায় না।’
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক এ মেয়র বলেন, দেশে কোনো বিচার ব্যবস্থা নাই। আছে শুধু পুলিশ, আছে শুধু কোর্ট। আর এগুলো দিয়েই সরকার টিকে আছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন, তাদের চিনতে গেলে সার্চলাইট দিয়ে খুঁজতে হয়, এরা কারা? তাদের নাম কী? বাপের পরিচয় কী? সাহস থাকলে আসেন, আমাদের সাথে একটু হাঁটুন। আমরা আপনাদের পাহাড়া দিব। দেখি আমাদের কতজন ফুল দেয় আর আপনাদের কতজন থুতু ফেলে। সেই সাহস আপনাদের হবে না। আপনারা শুধু কাচের ঘরে বন্দি হয়ে লম্বা লম্বা কথা বলবেন আর বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের সময় বাংলাদেশে ৫০ হাজার পুলিশ ছিল। এখন বাংলাদেশে পাঁচ লাখ পুলিশ। এই যে বিশাল পুলিশবাহিনী কাকে পেটানোর জন্য? যদি ডাকাত ধরা না যায়, ব্যাংক লুটেরাদের ধরা না যায়, যদি চোর ধরা না যায়, যদি খুনি ধরা না যায়, যদি পূজামণ্ডপ ভাঙার লোক ধরা না যায় তাহলে এ পুলিশের কাজ কী? বিএনপিকে ঠেকানো? এটা বোধহয় বেশিদিন আর চলবে না। কারণ সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কিন্তু একটা আছে। নিজ থেকেই আপনা-আপনি প্রতিরোধ ব্যবস্থা হয়ে যায়।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি এখানে গাড়ি থেকে নামার সময় দেখলাম অনেক পুলিশ। আরে ভাই কেন? এটা কি জঙ্গি অফিস? এটা তো বিএনপির কার্যালয়। স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত একটি দোয়া মাহফিল হবে। এখানেও আপনারা আমাদের বসতে দিবেন না?’
ঢাকার সাবেক এই মেয়র আরও বলেন, ‘এটা ঠিক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত মানের চিকিৎসা দরকার। কিন্তু এই সরকার সেটা তো দিবে না। তিলে তিলে তাকে মেরে ফেলা সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই মাত্র দুই কোটি টাকার একটি মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দেশবাসী জানে ট্রাস্টের টাকা ট্রাস্টেই আছে। সেই দুই কোটি টাকা ব্যাংকে এখন আট কোটি টাকা হয়ে গেছে। সেই টাকা তিনি নিজেও খাননি ও বিদেশেও পাচার করেননি।’
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আপনাদের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়ছে। আপনার এক মন্ত্রী বলেছেন, চার হাজার কোটি টাকা নাকি কোনো বিষয় না। আর সে জায়গায় মাত্র দুই কোটি টাকার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেল খাটবেন এটা কোনো কথা হতে পারে না। আসল কথা হলো উনাকে আটকে রাখা, উনাকে তিলে তিলে হত্যা করা। এটাই হচ্ছে এই সরকারের পরিকল্পনা।
মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী প্রমুখ।