বিএনপি নয়, আ.লীগ আইসিইউতে চলে গেছে : ফখরুল
‘নির্বাচনে না এলে বিএনপি আইসিইউতে যাবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি আইসিইউতে যাবে না। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ইতোমধ্যে আইসিইউতে চলে গেছে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার নাটক শুরু করেছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে এতো দরদ উথলে উঠল কেনো! সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন যেখানেই থাকুক। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগ, সরকার নিজে। অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে এবার লাভ হবে না। সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
দেশ খাদের কিনারায় চলে আসছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, বিদ্যুৎ গ্যাস জ্বালানির দাম বেড়েছে সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই, তাদের দরকার শুধু টাকা। বিদ্যুৎ আমদানি ক্যাপাসিটির নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে৷ মূল্যস্ফীতি দুর্নীতি এমন পর্যাযে চলে গেছে কেউ বিনিয়োগ করছে না, এজন্য দায় সরকারের।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জনগণের প্রতি এ সরকারের কোন জবাবদিহিতা নেই। ২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি বাম দলের লোকও আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে; তারা আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ।
সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এটিই একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিল না। সংকট সমাধানে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিল। যতবার ভোট চুরি করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কখনও ভোট চুরি করেনি। আওয়ামী লীগের লজ্জা হওয়া উচিৎ বিএনপির ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তারপর মামলা নিয়ে বাণিজ্য করে। পুলিশকে ব্যবহার করছে, র্যাবকে ব্যবহার করছে। মার্কিনিরা নিষেধাজ্ঞা দিবে এটি নিয়ে রাজনীতি করবে এটি বিএনপি চায় না। পকেট ভারীর স্বার্থে উন্নয়ন করছে সরকার। ঐক্যবদ্ধ থেকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আরও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ ভেঙে দিতে হবে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনের জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল-ডাল, তেল-লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে শুরু করেছি, তখন থেকে তারা গুলি করে হত্যা করতে শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে-আন্দোলনকারীকে প্রকাশ্যে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এখনো আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। এই যে ভয়াবহ একটি দুর্বিষহ অবস্থা। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জিএম সিরাজ, ওলামা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।