বিএনপি থেকে সাবধান, দেশ গিলে খাবে : কাদের
ক্ষমতায় এলে বিএনপি আবারও লুটপাটের রাজনীতি শুরু করবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলটি থেকে সাবধানে থাকতে দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ শনিবার ঢাকা জেলার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা মরণ কামড় দিয়েছে। মরণ কামড় আর জীবন কামড়; যে কামড়ই দেন, বলে যাচ্ছি শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামান। তত্ত্বাবধায়ক আর হবে না। আদালত জাদুঘরে পাঠিয়েছে। আমাদের দোষ না। উচ্চআদালত নিষিদ্ধ করেছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক না হলে নির্বাচনে যাবেন না? যাবেন, যাবেন....গাধা পানি ঘোলা করে খায়। সময় এলে দেখা যাবে?
বিএনপির শাসনামলে দেশের রিজার্ভের করুণ চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশের অর্থনীতি বিএনপি গিলে খেয়েছে। বিএনপি এদেশের মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধ গিলে ফেলেছে। এবার যদি ক্ষমতায় যেতে পারে দেশসহ গিলে ফেলবে। সাবধান! বিএনপি থেকে সাবধান! বড় লোকের বাড়িতে লেখা থাকে কুকুর হতে সাবধান। আমরা বলি বিএনপি হতে সাবধান।
আবারও হাওয়া ভবন আনতে তারা ‘টেক ব্যাক’ বাংলাদেশের কথা বলছেন, বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জাতীয় ও দলীয় পতাকা, বেলুন উত্তোলন এবং সাদা পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু করেন।
এ সময় পরিবেশন করা হয় জাতীয় ও দলীয় সংগীত। গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে দেশের পতাকার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সম্মেলনের জন্য দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে বড় আকৃতির মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চে ছিলেন কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা।
ওবায়দুল কাদের সম্মেলন এলাকায় আসেন বিকেল পৌঁনে ৪টার দিকে। এর আগে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির জন্য দেশের বাইরে থেকে টাকা আসছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির জন্য দুবাই থেকে টাকা আসছে। খোঁজ পেয়েছি। ব্যবস্থা নিচ্ছি।
টাকা উড়ে আকাশে, টাকা উড়ে বাতাসে। টাকার খেলা হবে না। খেলা হবে আপনাদের সেই সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক খুনি ডাকাত সরকার, তাদের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, যাদের হাতে স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিরাপদ নয়, তাদের সাথে খেলা হবে।
তিনি বলেন, খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। ভোটচুরির বিরুদ্ধে খেলা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে, তাদের সাথে খেলা হবে। খেলা হবে ভুয়া ভোটার তালিকা করার বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো শক্তি হারাতে পারবে না, ইনশাল্লাহ।
এ সময় বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেতাটা কে? মুচলেকা দিয়ে গোপনে জীবনে আর রাজনীতি করবো না বলে লন্ডনে চলে গিয়েছে কে? সেই তারেক রহমান হচ্ছে ফখরুলের নেতা।
ফখরুলকে যেভাবে ফরমায়েশ দেয়, ফখরুল সেভাবে পুতুলের মতো নাচে। বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতিতে, ক্ষমতায় শেখ হাসিনার মতো সৎ লোক, পরিশ্রমী লোক চায়। মানুষের কষ্টে যার রাতের ঘুম নষ্ট হয় সেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আহমদ হোসেন হুমায়ুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কৃষি ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা প্রমুখ।
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।