বিদেশে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের তথ্য-প্রমাণ রয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সরকারের কাছে আছে। নয়াপল্টন অফিসের ঠিকানা দিয়ে তারা লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এ কাজের জন্য কীভাবে অর্থ বাংলাদেশ থেকে গেল সেগুলো তদন্ত ও দেখভাল সরকারের যে সমস্ত বিভাগ ও দপ্তর করে, তাদেরকে ইতোমধ্যে সেগুলো জানানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে ১২টি মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দিতে চিঠি লিখেছে সেখানে দুই-তিনটি ছাড়া বাকিগুলো নামসর্বস্ব, এগুলোর নাম আমরা আগে শুনিনি। আপনারা শুনেছেন কি না আমার জানা নেই। এই চিঠি দিয়েছে গত বছরের ৮ই নভেম্বর। দুই মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর এটি হঠাৎ মিডিয়ায় কেন নিয়ে এলো ? এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে, তাদের অবৈধ অর্থ লবিস্ট ফার্মে লগ্নি করে, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য, রপ্তানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের সমৃদ্ধি-প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করার জন্য, বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
একটি রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে যখন এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে, তারা দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না, সেই প্রশ্ন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে জনগণের ওপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই। তাই তারা ষড়যন্ত্রের পথটাই বেছে নিয়েছে। বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ সেই ষড়যন্ত্রের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে, বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ পাঠিয়ে বাংলাদেশকে বিদেশের সামনে ভুলভাবে তুলে ধরার জন্য, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ এবং রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে, সেটি যখন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সংসদে বললেন, এরপর থেকে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। কয়েকদিন বিএনপি নিশ্চুপ ছিল। কারণ কেউ যখন অপরাধ করে, তার অপকর্মগুলো যখন প্রকাশ পায়, তখন কি বলবে খেই হারিয়ে ফেলে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার জন্য এফবিআই-এর এজেন্ট ভাড়া করেছিল। এফবিআইর সেই এজেন্টকে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলি এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, সে বৈঠকের ছবি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। বিএনপি কি এগুলো অস্বীকার করতে পারবে ? তাদের অপকর্ম যখন আজকে বেরিয়ে এসেছে, তখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আবোল-তাবোল বকছে, এর বেশি কিছু নয়।’
এসময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম চিশতি, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মনওয়ার রিয়াদ মুন্না এবং সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।