বিনা খরচে ১৪ বছরে পৌনে ৯ লাখ মানুষকে আইনি সেবা
২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র আওতায় বিনামূল্যে আইনি সেবা পেয়েছেন দেশের আট লাখ ৭৯ হাজার ৯২৯ জন। সম্প্রতি সংস্থাটি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রমে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৭৭ জন। ৬৪ জেলার লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৭২ হাজার ৮০১ জন।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৭৩৮ জন এবং টোল ফ্রি হেল্পলাইনের মাধ্যমে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৩ জন।
এছাড়া ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এক লাখ ৫ হাজার ৬৫০ জন কারাবন্দি আইনি সহায়তা পেয়েছেন।
দরিদ্র ও অসহায় বিচারপ্রার্থীদের সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করে।
এ আইনের আওতায় সরকার ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করে এবং দরিদ্র অসহায় মানুষের আইনের আশ্রয় ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশে এ সংস্থার অধীনে প্রত্যেক জেলায় জেলা ও দায়রা জজকে চেয়ারম্যান করে একটি করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা লিগ্যাল এইড কমিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টেও একটি কমিটি রয়েছে। যার চেয়ারম্যান হচ্ছেন হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি।
সরকারি আইনি সেবা পাচ্ছেন যারা
অসচ্ছল বা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তি, যার বার্ষিক গড় আয় সুপ্রিম কোর্টে আইনগত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেড় লাখ এবং অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয় এবং যেকোনো শ্রমিক, যার বার্ষিক গড় আয় এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়। যেকোনো শিশু; মানবপাচারের শিকার যেকোনো ব্যক্তি; শারীরিক-মানসিক নির্যাতন এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু; নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে; যেকোনো উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোক।
পারিবারিক সহিংসতার শিকার অথবা সহিংসতার ঝুঁকিতে আছেন, এ ধরনের যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি; বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি; ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মা; দুর্বৃত্তের অ্যাসিড দগ্ধ নারী ও শিশু।
আদর্শগ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অসচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুস্থ নারী, যেকোনো প্রতিবন্ধী, বিনা বিচারে আটক অসচ্ছল ব্যক্তি, আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি, জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত বা সুপারিশকৃত অসহায় বা অসচ্ছল ব্যক্তি ও এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণে সংস্থা কর্তৃক চিহ্নিত ব্যক্তি।