বিবস্ত্র করে ভিডিও, ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করত চক্রটি
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়তেন। পরে কৌশলে বাসায় ডেকে বিবস্ত্র করে তার ভিডিও ধারণ করতেন। সর্বশেষে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা এবং উত্তরার দক্ষিণখান থেকে দুই নারীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক আবদুল্লাহ আল মোমেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন আল মাহমুদ ওরফে মামুন (২৬), আকরাম হোসেন ওরফে আকিব (২০), তানিয়া আক্তার (২৫), মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া (২১), মো. রুবেল (৩২), মো. মহসীন (২৬) ও মো. ইমরান (৩২)।
একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ফেসবুকে সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া। তিনি কৌশলে ওই ব্যক্তিকে ঢাকার একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায় বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যান। রুমের ভেতর প্রবেশের পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রিয়া তার সহযোগীদের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। পরে সেসব ভিডিও দেখিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন।
র্যাব অধিনায়ক মোমেন বলেন, ওই ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ১ লাখ টাকা এবং ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা আদায় করে চক্রটি। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি মানুষের কাছ থেকে একইভাবে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জানিয়ে আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, স্পর্শকাতর ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা কোথাও কোনো অভিযোগ না করে নিরব থাকতেন। চক্রটি মূলত করপোরেট ব্যক্তিদের টার্গেট করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তার আল মাহমুদ মামুন ওই চক্রের নেতা। তানিয়া আক্তার ও মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া তার দুই সহযোগী। তাদের ছবি ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হত এবং আবাসিক হোটেল বা ফ্ল্যাট ডেকে নিয়ে যেত মামুন। এরপর ভিডিও ধারণ করে সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একই কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে আসছিল।