‘বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন’
ফারদিন নুর পরশ স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন বলে দাবি করেছে র্যাব ও ডিবি। আজ বুধবার পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থা দুটি। তাদের দাবি, ফারদিনকে হত্যা করা হয়নি, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছেন।
আজ বুধবার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ফারদিন নুর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় র্যাব তাঁর পারিবারিক সূত্র, তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্লেষণ, সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের আলোকে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছে।’
র্যাবের দাবি, ‘গত ৪ নভেম্বর বিকেল তিনটার সময় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশে বের হন ফারদিন। বিকেল আনুমানিক ৫টায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তাঁর পরিচিত এক নারীর সঙ্গে দেখা করেন। তারপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমণ্ডিসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন। পরে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন। তারপর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ফারদিন টিএসসিসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন।’
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পরে তিনি (ফারদিন) রিকশায় রামপুরার উদ্দেশে যান। আনুমানিক রাত পৌনে ১০ টার দিকে রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিকশা থেকে নেমে যান এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, পরবর্তীতে তিনি কেরাণীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় যান।’
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, রাত ২টা এক মিনিটে যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা থেকে ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২ টা ২০ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায়।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২ টা ২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল। তারপর ২ টা ৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে যান ফারদিন। ব্রিজের তারাবো প্রান্ত হতে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দূরত্ব আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার। পরে ২ টা ৩৪ মিনিট ৯ সেকেন্ডে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করেন ফারদিন এবং রাত ২ টা ৩৪ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে ব্রিজের ওপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন। ঝাঁপ দেওয়ার পর ২টা ৩৪ মিনিট ২১ সেকেন্ডে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে তলিয়ে যান ফারদিন।
২টা ৩৫ মিনিট ৯ সেকেন্ডে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়াও রাত ২ টা ৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার মিন্টো রোডের ডিএমপির ডিবি পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে একই ধরনের তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন।