বেনাপোল দিয়ে ১০ হাজার বাংলাদেশির ভারত গমন
ভারত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করায় ঈদের ছুটি কাটাতে ভ্রমণপিপাসু বাংলাদেশিদের উপচেপড়া ভিড় বেনাপোল চেকপোস্টে। ঈদের লম্বা ছুটিতে আজ সোমবার সকাল থেকে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গেছে। কেউ যাচ্ছে ভ্রমণে, কেউ বা যাচ্ছে ডাক্তার দেখাতে। আবার কেউ বা যাচ্ছে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন তিন হাজার থেকে চার হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করে থাকে। ২০২০ সালে মার্চ মাসে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকার ধারণ করলে উভয় পাশের চেকপোস্ট বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা চালু থাকে।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, গত মাসে করোনার সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করায় বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীদের বেশিরভাগই তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে ভারতীয় অংশে। পাসপোর্টধারী যাত্রীকে নো ম্যানসল্যান্ডে পৌঁছাতে বাংলাদেশ সাইডে ৮ জায়গায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। সেগুলো হলো সোনালী ব্যাংক, পোর্টগেট, কাস্টমস স্ক্যানিং পয়েন্টে, কাস্টমস আনসার গেট, ইমিগ্রেশন ডিপারচার এবং ইমিগ্রেশন চেক আউট গেট।
ব্যাংক থেকে ইমিগ্রেশন চেক আউট গেট অর্থাৎ নো ম্যানসল্যান্ড পর্যন্ত একজন যাত্রীকে পৌঁছাতে সময় লাগছে তিন থেকে চার ঘণ্টা। তবে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের মাথা পিছু ৫০০ টাকা দিলে পাঁচ মিনিটে পৌঁছানো যায় বলে যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা না দিলে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ভারতে যাওয়া যাত্রীদের নো ম্যানসল্যান্ড এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটি পরপর সাত-আটজন যাত্রী ভারতে ঢুকে ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রবেশ করছে। সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগ প্রত্যেক যাত্রীকে করোনার আরটিপিসিআর টেস্ট করছে। এখানে সময় লাগছে ৪০ মিনিট। এরপর পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে একজন যাত্রী প্রবেশের পর শুরু হয় অন্য কাহিনি। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে রয়েছে প্রায় ৪০টি ডেস্ক। কিন্তু অফিসার আছেন তিনজন।
তা ছাড়া ভারতীয় প্রবেশদ্বারে ধীরগতিতে পাসপোর্ট চেকিং করায় নো ম্যানসল্যান্ড এলাকায় দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ এ সারি আরও বাড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে এসব পাসপোর্টধারী যাত্রীকে। রোদ-বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে যাত্রীরা। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা ও রোগীদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ জানান, আমাদের ইমিগ্রেশনে যাত্রী এলে তেমন কোনো সময় লাগছে না। ওপারে স্বাস্থ্য বিভাগে অনেক সময় লাগায় বাংলাদেশি যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছে। প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে যেসব আনসার কর্মরত আছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ওখানকার কোনো আনসার বা অন্য কেউ অনিয়ম করলে সেটার দায়ভার বন্দর কর্তৃপক্ষের।