ব্রুনাইয়ের সুলতানকে লাল গালিচা স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ
ব্রুনাই দারুসসালামের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মুইজ্জাদ্দিন ওয়াদ্দৌলাহ আগামীকাল শনিবার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে এই প্রথম সুলতান ওয়াদ্দৌলাহ ঢাকা সফরে আসছেন। শনিবার তাঁকে বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
সুলতানকে বহনকারী একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট আগামীকাল দুপুর ১২ টায় (বাংলাদেশ সময়) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য ও পদস্থ বেসামরিক এবং সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ব্রুনাইয়ের সুলতানকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজকীয় পরিবারের সদস্য, সে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী এবং ব্রুনাই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্রুনাইয়ের সুলতানের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করবে। সেখান থেকে একটি সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাঁকে সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে ব্রুনাইয়ের সুলতান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সুলতান সেখানে একটি গাছের চারা রোপন এবং ‘দর্শনার্থী বইয়ে’ স্বাক্ষর করবেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, সাভার থেকে সুলতানকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হবে। ঢাকায় সফরকালে সুলতান এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
একইদিন বিকেলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ একে আব্দুল মোমেন হোটেলের সভাকক্ষে সুলতানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এদিন সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরে ব্রুনাইয়ের সুলতান বঙ্গভবনের গ্যালারি হলে দশনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
রাষ্ট্রপ্রধান সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে সুলতানের সম্মানে রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন।
১৬ অক্টোবর সকাল সোয়া দশটায় সুলতান ওয়াদ্দৌলাহ ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি সেখানে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যরা সুলতানকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সকাল ১১টা পাঁচ মিনিটে ব্রুনাইয়ের সুলতান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক করবেন। পরে পিএমওর চামেলী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বঙ্গভবনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সুলতানের তিন দিনের সফর বিশেষ গুরত্বপূর্ণ, কারণ অন্যান্য কর্মসূচির সঙ্গে করোবীতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
সুলতানের সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল,বাংলাদেশী জনশক্তি নিয়োগ এবং দু’দেশের নাবিকদের সনদ দেওয়াসহ পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। সুলতান সেখানে ‘দর্শনার্থী বইতে’ স্বাক্ষর করবেন।
সুলতান ১৭ অক্টোবর ঢাকা ত্যাগ করবেন। ঢাকা ত্যাগের আগে বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদানের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনাইয়ের সুলতান ও তাঁর সফর সঙ্গীদের বিদায় জানাবেন।