বড় বোন প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ছোট বোনকে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৩
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তরুণীর ছোট বোনকে অপহরণ করেন সায়ের আলম পাভেল (৩৪) নামের এক যুবক। পরে দাবি করা হয় দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে অপহরণকারী তিন যুবক। তাঁরা নারী পাচারচক্রের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলীতে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন।
আজিমুল হক জানান, রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের রংমিস্ত্রি সায়ের আলম পাভেল (৩৪) নিজেকে বিবিএ, এমবিএ ডিগ্রিধারী আবার কখনো ম্যাজিস্ট্রেটের ছেলে দাবি করতেন। এসব পরিচয় ব্যবহার করে একই এলাকার খাদিজা আক্তার নামের এক তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু, খাদিজা পাভেলের প্রেমে সাড়া দেননি। দুই-তিন বছর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় খাদিজার ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি।
আজিমুল হক জানান, বড় বোন প্রস্তাবে রাজি না হলে ছোট বোন আয়েশাকে (১৪) প্রলোভন দেখান পাভেল। বলেন—তাঁর ছোট ভাই লন্ডনের বড় ব্যবসায়ী, তাঁর সঙ্গে আয়েশার বিয়ে দেবেন। পরে তাঁকে গত ১৪ আগস্ট তেজগাঁও থেকে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিয়ে যান। এরপর পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
১৮ আগস্ট অপহরণের শিকার মেয়েটির বাবা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে পাভেলের সহযোগী জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে অপহরণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার ও অপহরণের সঙ্গে জড়িত পাভেল, জাহাঙ্গীর ও তাঁর সহযোগী আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ।
আজিমুল হক বলেন, ‘মেয়ের অপহরণের পর দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি, না দিলে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি ও চিরতরে গুম করে দেওয়া ভয় দেখালে অপহরণের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার আয়েশার বাবা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে আয়েশা আক্তারকে উদ্ধার করা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে আজিমুল হক বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি, গ্রেপ্তার তিন অপহরণকারী নারী পাচারচক্রের সদস্য। গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আরও খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে। মেয়েকে অপহরণের সময় যে ছেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তার বিষয় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’