ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন দুই দেশের জন্য যুগান্তকারী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুজিববর্ষ উদযাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। এটি আমাদের দুই দেশের জন্য একটি যুগান্তকারী বছর।’
বাংলাদেশে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। নরেন্দ্র মোদির সফর ও আলোচ্যসূচি চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন জয়শংকর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সহকর্মী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর এবং আমি সবেমাত্র একটি ফলপ্রসূ সভা শেষ করেছি। আমরা চলমান দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলোর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করেছি, যা আমরা সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে নিতে পারি। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায়গুলো এবং পারস্পরিক উপকারী উপায়ে একে অপরের অগ্রাধিকারকে কীভাবে সমন্বয় করতে পারি, তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছি।’
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘কোভিড সহযোগিতা, সংযোগ, বাণিজ্য, পানি বণ্টন, সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতি আমাদের আলোচনার মূল উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট যে, নরেন্দ্র মোদি মুজিববর্ষ উদযাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।’
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানগুলো যৌথভাবে উদযাপনের জন্য আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের দুজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এক সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চলমান মহামারিবিরোধী টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়নে দুই দেশের সহযোগী উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি। আপনারা সবাই অবগত যে, বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিড ভ্যাকসিন কিনেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বিনামূল্যে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশের সফল ও ফলপ্রসূ সফরের প্রত্যাশায় রয়েছি।’
এক দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে এস জয়শংকর আজ সকালে দিল্লি থেকে ঢাকায় আসেন। তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আগামী ২৬ ও ২৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। মূলত, নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সূচি চূড়ান্ত করতে ঢাকায় এলেন এস জয়শংকর।
সফরকালে এস জয়শংকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকাল বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এস জয়শংকরের সফর সম্পর্কে দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকা আসছেন। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে এস জয়শংকরের এ সফর। আজ রাতেই এস জয়শংকরের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।