ভারতে বাংলাদেশ চতুর্থ বৃহত্তম রেমিট্যান্স পাঠানো দেশ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আসাম ও ভারত আমার হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। এবং অনেক ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছে। ভারতে বাংলাদেশ চতুর্থ বৃহত্তম রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ।’
আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আসামের খানাপাড়ার কৈনাধারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২১ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এসেছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে ঢাকা ও নয়াদিল্লি ছাড়াও বিশ্বের ১৮টি রাজধানীতে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা দিয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আসাম আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল। এ জন্য আসামের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
এ সময় ড. সরমা জোর দিয়েঁ বলেন, আসাম ব্যবসা,বাণিজ্য,সংযোগ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রচারের মাধ্যমে দুই জনগণের সাধারণ সুবিধার জন্য বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হতে আগ্রহী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাম্প্রতিক গতির প্রশংসা করেন। তিনি কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
এ সময় ড. শর্মা ব্রিটিশ আমলে বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর সঙ্গে রেলযোগাযোগের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান—আসাম উন্নত চিকিৎসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে এবং চিকিৎসা ও অধ্যয়নের উদ্দেশে বাংলাদেশের জনগণের গন্তব্য হতে পারে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন—শান্তি ও স্থিতিশীলতা হলো মূল কারণ, যা আসামের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেছে। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সন্ত্রাস ও বিদ্রোহের প্রতি তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র জন্য ধন্যবাদ জানান।
এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের সেরা সম্পর্ক উপভোগ করছে। আসাম-বাংলাদেশ উভয়ই তাদের পণ্যের বাজার এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্যের উৎস হওয়া আসাম বাংলাদেশের গতিশীল আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির সুবিধা নিতে পারে। তিনি দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং পর্যটনের প্রসারের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নৌপরিবহণ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যমান সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশা করেন—আগামী ৫০ বছরে এটি আরও শক্তিশালী হবে।
বৈঠকে দুই নেতা উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠকে রাজ্য সরকারের সচিবেরা অংশ নেন।
ড. মোমেন আজ শনিবার থেকে শুরু হওয়া ন্যাচারাল অ্যালাইজ ইন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারডিপেনডেন্স-এর সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার গুয়াহাটিতে পৌঁছেছেন।